ভালো থাকুন
শিশুর মূত্রনালির সংক্রমণ
শিশুদের ডায়াপার পরানোর পর মলমূত্রসহ দীর্ঘ সময় রেখে দিলে তা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়
কিডনি অকার্যকর হওয়ার পেছনে যতগুলো কারণ আছে, তার মধ্যে বারবার মূত্রনালির সংক্রমণ অন্যতম। শিশুরাও এই সমস্যায় ভোগে।
শিশুদের মূত্রনালিতে প্রস্রাবের প্রবাহে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা বা বাধার সৃষ্টি হলে এই সংক্রমণ বারবার হতে পারে। কারণ, প্রতিবন্ধকতা থাকলে প্রস্রাব মূত্রনালিতে জমতে থাকে, ঠিকমতো বের হতে পারে না। জমতে থাকা এই প্রস্রাবে জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে। ধীরে ধীরে তা মূত্রনালির নিচের অংশ থেকে ওপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং একসময় কিডনিও আক্রান্ত হয়। একপর্যায়ে কিডনি কর্মক্ষমতা হারায়।
মূত্রনালিতে প্রতিবন্ধকতার কারণ
শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে অন্ত্রে জমা কঠিন মল পাশের মূত্রনালির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এতে মূত্রনালি সংকীর্ণ হয়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হতে পারে।
প্রস্রাব দীর্ঘ সময় চেপে রাখলে সমস্যা হতে পারে।
মূত্রনালির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেকোনো পর্যায়ে জন্মগত ত্রুটি থাকলে প্রস্রাবের প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতে পারে।
পানি কম পান করলে।
প্রস্রাব পুরোপুরি না হলে বা মূত্রথলি ঠিকভাবে খালি না হলে এমনটা হতে পারে।
শিশুদের ডায়াপার পরানোর পর মলমূত্রসহ দীর্ঘ সময় রেখে দিলে তা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
রাসায়নিক মিশ্রিত পানি বা সাবানের ফেনাযুক্ত পানিতে দীর্ঘ সময় গোসল করলে সমস্যা হতে পারে।
ছেলেশিশুদের লিঙ্গের বাইরের ত্বকের ছিদ্র খুব সংকীর্ণ থাকলে প্রস্রাবের প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতে পারে।
স্নায়বিক সমস্যায় প্রস্রাবে সংক্রমণ হতে পারে।
গুঁড়া কৃমির সংক্রমণ, মূত্রনালির কোনো রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসার সময় মূত্রনালিতে যন্ত্রপাতি ঢোকানো কিংবা মূত্রনালিতে পাথর হলেও সংক্রমণ হতে পারে।
বুঝবেন যেভাবে
তীব্র কাঁপুনিসহ জ্বর, পিঠের নিচের দিকে কিডনির জায়গায় ব্যথা থাকতে পারে। অনেক সময় জ্বর তীব্র থাকে না, তবে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া করতে পারে, কিছুক্ষণ পরপর প্রস্রাব হতে পারে। তলপেটে ব্যথা হয়। প্রস্রাবে অনেক সময় রক্ত যেতে পারে।
সংক্রমণ রোধে করণীয়
মূত্রনালির কোথাও কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে কি না, তা নির্ণয় করে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হবে।
ইতিমধ্যে কিডনিতে কোনো ক্ষত হয়েছে কি না, তা নির্ণয় করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
শিশুর খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনে পরিবর্তন করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৌচাগার সুবিধা উন্নত করতে হবে। বিশেষ করে মেয়েদের ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে হবে।
অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা : বিভাগীয় প্রধান, শিশুরোগ বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল