
বাতজ্বর বা রিউমেটিক ফিভার নিয়ে অনেকেরই রয়েছে দুশ্চিন্তা। বাতজ্বর থেকে হার্টের ভালভ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে কম-বেশি সবারই জানা। তবে বাতজ্বর নিয়ে সাধারণ মানুষ তো বটেই, চিকিৎসাসেবীরাও নানা বিভ্রান্তিতে ভোগেন।
৫ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয় এ রোগে। এ ছাড়া ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বসবাস, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাব, গলাব্যথা, বিশেষত ফ্যারিনজাইটিস রোগটির ঝুঁকি বাড়ায়।
বাতজ্বরের রোগীদের গলাব্যথা, টনসিলের প্রদাহ, গলনালি বা ফেরিংসের প্রদাহের একটি সুনির্দিষ্ট ইতিহাস থাকে। নাম বাতজ্বর হলেও সব সময় জ্বর না-ও থাকতে পারে। হলেও তা বিরতি দিয়ে আসে এবং মাঝারি মাত্রার। অস্থিসন্ধির প্রদাহ, ভালভের প্রদাহ, ত্বকে গোটা ও বিশেষ ধরনের র্যাশ, বুকে ব্যথা ও ধড়ফড়ানি, হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যাওয়া, স্নায়বিক সমস্যা—যেমন অস্বাভাবিক আচরণ, হাত-পা ছোড়াছুড়ি এমন নানা লক্ষণ দেখা দিতে পারে। প্রদাহ দেহের বড় অস্থিগুলোতেই হয় এবং এক সন্ধি থেকে আরেক সন্ধিতে লাফিয়ে যেতে থাকে।
এ রোগটি সাধারণ কোনো রোগ নয়। এর চিকিৎসা দীর্ঘস্থায়ী। রোগনির্ণয় ও সুচিকিৎসা না হলে পরবর্তী সময়ে হৃদ্যন্ত্রের ভাল্বের সমস্যা হতে পারে। তাই রোগনির্ণয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। মনে রাখবেন:
—যেকোনো হাত-পায়ে বা সন্ধিতে ব্যথা মানেই বাতজ্বর নয়। নানা কারণে শিশু-কিশোরদের সন্ধিতে ব্যথা হয়।
—শিশু-কিশোরদের জুভেনাইল রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস (জেআইএ) রোগে সন্ধি ফুলে গেলেও তা এক সন্ধি থেকে অন্য সন্ধিতে ছুটে বেড়ায় না। আর এদের জীবাণু সংক্রমণের প্রমাণও পাওয়া যায় না। জেআইএ রোগে সাধারণত ছোট সন্ধিগুলো আক্রান্ত হয়।
—অনেক সময় বাড়ন্ত শিশুদের পায়ের মাংসপেশিতে, বিশেষ করে সন্ধ্যাবেলা ব্যথা হতে পারে। অস্থি সংযোগস্থল ফুলে না গেলে, পড়ে যাওয়া বা আঘাতের ইতিহাস না থাকলে বা সঙ্গে জ্বর না থাকলে ধরে নিতে হবে এটি গ্রোয়িং পেইন।
—কোনো নির্দিষ্ট অস্থি সংযোগস্থল জীবাণু সংক্রমণের কারণে ফুলে যেতে পারে। একে বলে সেপটিক আর্থ্রাইটিন। এটিও বাতজ্বর নয়।
ডিন, মেডিসিন অনুষদ, বিএসএমএমইউ