সুস্থ নবজাতকের ওজন ও শরীরের মাপ

জন্মের পর নবজাতক সুস্থ আছে কি না, তার কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে মা-বাবাসহ পরিবারের অন্যরা অনেক সময় পেরেশানে থাকেন। কিছু বৈশিষ্ট্যের দিকে লক্ষ রাখলে বুঝতে সুবিধা হবে যে নবজাতক সুস্থ আছে।

ওজন

একটি সুস্থ নবজাতকের স্বাভাবিক ওজন ২.৮ থেকে ২.৯ কেজি হওয়ার কথা। তবে উন্নত বিশ্বে তা ৩.৪ কেজির মতো হয়ে থাকে। নবজাতকের ওজন যেসব কারণে প্রভাবিত হয়—

গর্ভপূর্ব মায়ের পুষ্টি

  • মায়ের ওজন ৪৫ কেজির কম থাকলে।

  • মায়ের উচ্চতা ১৪৫ সেন্টিমিটারের কম হলে।

  • হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ৮ গ্রাম/ডেসিলিটারের কম থাকলে।

  • রক্তে অ্যালবুমিন ২.৫ গ্রাম/ডেসিলিটারের কম থাকলে।

এ রকম মায়ের নবজাতক স্বল্প জন্ম-ওজন অর্থাৎ ২.৫ কেজির কম ওজন নিয়ে ভূমিষ্ঠ হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।

  • গর্ভকালীন মায়ের সংক্রমণ যেমনÑইউটিআই, ধূমপান, অ্যালকোহল বা অন্যান্য মাদকাসক্তি, রেডিয়েশনের সংস্পর্শে আসা, উঁচু পার্বত্য এলাকায় বসবাসেÑস্বল্প ওজনের নবজাতক হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

  • গর্ভস্থ ভ্রূণের নানা ক্রোমোজোম বিচ্যুতি, যেমনডাউন সিনড্রোমের শিশু স্বল্প-ওজনের হয়ে ভূমিষ্ঠ হয়।

  • যমজ বা একসঙ্গে ততোধিক সন্তান প্রসবে ওজন কম হতে পারে।

  • গর্ভবতী মায়ের টক্সেমিয়া, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ ইত্যাদিও নবজাতকের ওজন কম হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে।

  • তবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মায়ের সন্তান গড় ওজনের চেয়ে বেশি ওজন নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয়।

দৈর্ঘ্য

পূর্ণ গর্ভকাল পাওয়া সুস্থ নবজাতকের দৈর্ঘ্য সাধারণভাবে ৫০ সেন্টিমিটারের মতো হয়।

মাথার আকার

নবজাতকের মাথার বেড়ের পরিমাপ সাধারণত ৩৫ থেকে ৩৭ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে।

দেহের আকার-আকৃতি

শরীরের তুলনায় মাথা বড়, মুখমণ্ডল ছোট ও গোলাকার, বুকের খাঁচা গোলাকৃতি ও পেট উঁচু দেখায়। তুলনায় হাত-পা ছোট থাকে এবং নাভি দেহের মধ্যবিন্দু ধরে শরীরের ওপরের অংশ শরীরের নিচের অংশের চেয়ে বড় থাকে।

অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল