স্বাদ ও স্বাস্থ্যের মেলবন্ধন ফরচুন রাইস ব্রান অয়েল
আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে রাইস ব্রান অয়েল। আর তা হবে নাই–বা কেন, রান্নায় তেল ব্যবহারের ওপর স্বাস্থ্য যে অনেকটাই নির্ভরশীল। আর স্বাস্থ্যকর ভোজ্যতেলের কথা বলতেই প্রথম যে নামটি ভাবনায় আসে, তা হলো ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েল।
রান্নাঘরে স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহারে ঝুঁকিপূর্ণ অনেক রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, রাইস ব্রান অয়েলে ট্রান্সফ্যাট নেই; বরং এতে রয়েছে শরীরের জন্য উপকারী মনোস্যাচুরেটেড ও পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ওরাইজেনল নামে একটি অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট উপাদান থাকায় এটি রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। হৃৎপিণ্ডের পক্ষে বিশেষ উপকারী হওয়ায় ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েল ‘হার্ট অয়েল’ নামেও সুপরিচিত।
কয়েক যুগ ধরে ক্যানসার নামক আতঙ্ক এর প্রভাব বিস্তার করেই চলেছে। আর ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েলের বিশেষ উপাদান ভিটামিন ই ক্যানসারসহ শরীরের নানা জটিল রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। শুধু তা-ই নয়, এতে বিদ্যমান প্রাকৃতিক অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট দেহের বিপাকক্রিয়া উন্নত করতে সহায়তা করে। তা ছাড়া নির্দিষ্ট পরিমাণে সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে এটি দেহের ওজন কমাতেও ভূমিকা রাখতে পারে। আর সৌন্দর্যসচেতনদের কাছে এর যেন কোনো বিকল্প নেই; কারণ, এর স্কুয়ালেন নামক উপাদান ত্বকের জন্য বেশ উপকারী।
সাধারণ ভাবনা থেকেই বোঝা যায় যে এতে আঠালো ভাব তুলনামূলকভাবে কম। কারণ, এটি খাবারে আটকে থাকে না। ফলে খাবারের তৈলাক্ত ভাব কম হয় এবং সহজে তেল ঝরানো সম্ভব হয়। তাই কম তেলে স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু রান্নার ক্ষেত্রে এর কোনো তুলনা হয় না।
প্রতিদিনের রান্নায় মাছ, মাংস কিংবা সবজিতে ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েল যেন এর স্বাদকে দ্বিগুণ করে তোলে। আবার কোনো উপলক্ষকে কেন্দ্র করে মেইন ডিশ কিংবা সাইড ডিশ তৈরিতে এই তেলের বিকল্প নেই। তা ছাড়া বিকেলে চায়ের আড্ডায় ঘরে তৈরি হালকা নাশতা কে না ভালোবাসে! বিভিন্ন মুখরোচক খাবার, যেমন স্ন্যাকস, রোল, চাট, রাইস, রুটি ও কাবাব যেন অনেকের কাছে রীতিমতো রুটিনে পরিণত হয়েছে। স্ন্যাকসের মধ্যে রয়েছে শিঙাড়া, সমুচা, ফুচকা, চটপটি—যা আজকাল অনেকেই ঘরে তৈরি করতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। দাওয়াতে কাচ্চি কিংবা ফ্রায়েড রাইস—যা-ই হোক না কেন, স্বাস্থ্যের প্রতি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
ডিজিটাল এ যুগে বাহারি রান্না শেখা অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। তাই হায়দরাবাদি বিরিয়ানি থেকে শুরু করে চিকেন আফগানি, বিফ শিক কাবাব—সবই যেন নাগালের মধ্যে চলে এসেছে। আর ফাস্ট ফুড, বার্গার, পিৎজার পাশাপাশি বেড়ে চলেছে জাপানিজ, থাই ও কোরিয়ান খাবারের চাহিদাও। তবে যত যা–ই বলি, বাঙালির ইলিশ পোলাও, শর্ষে ইলিশ আর হাঁসের ভুনার প্রতি আবেগটা যেন মায়ের রান্নার মতো। তাই স্থান–কাল–পাত্রভেদে যে খাবারই মনোরঞ্জন করে থাকুক না কেন, এর আসল গুণ কিন্তু থাকে সেই পদ রান্নায় ব্যবহৃত তেলে। আর তা যদি হয় ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েল, তাহলে তো কথাই নেই।
এখানে উল্লেখ প্রয়োজন,‘গামা ওরাইজেনল’ রাইস ব্রান অয়েলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান; এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট; যা রক্তে ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়, খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং শরীরে কোলেস্টেরল তৈরি হতে দেয় না। ফলে হার্ট সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শুধু তা-ই নয়, এটি প্লাটিলেট অ্যাগ্রিগ্রেশন ও রক্তের মাত্রাতিরিক্ত লিপিড কমায় এবং পেশির ভর বৃদ্ধি করে। কিন্তু গামা ওরাইজেনল-এর পরিমাণ সঠিক না হলে ঐ রাইস ব্রান অয়েল কোন কাজে আসে না। এজন্য প্রতি ১০০ গ্রাম রাইস ব্রান অয়েলে ১০০০ মিলিগ্রাম গামা ওরাইজেনল থাকা আবশ্যক। এই মাত্রা বজায় থাকে বলেই ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েলকে অন্য সব রাইস ব্রান অয়েলের থেকে আলাদা করেছে।
অথচ গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারে থাকা রাইস ব্রান অয়েলের অন্তত ২৫ শতাংশের মধ্যে ভেজাল রয়েছে। এর মধ্যে পরিচিত বেশ কটি ব্র্যান্ডের রাইস ব্রান অয়েলে ‘গামা ওরাইজেনল’ পাওয়াই যায়নি কিংবা কোনোটিতে আবার পাওয়া গেলেও নির্ধারিত পরিমাণের অনেক নিচে।
আবার রাইস ব্রান অয়েল তৈরিতে নিম্নমানের উপাদান ব্যবহারের পাশাপাশি এর সঙ্গে অন্য তেল মিশিয়েও বাজারজাত করার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েলে বিদ্যমান ‘গামা ওরাইজেনল’ রয়েছে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থাৎ ১০০ গ্রামে ১০০০ মিলিগ্রাম। আর ফরচুন এই মাত্রা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। ফলে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েল এক কথায় আদর্শ। আর এ জন্যই হৃদ্রোগীদের খাবার তৈরিতে নির্দিষ্ট পরিমাণে ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েল ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
মনে রাখতে হবে, রাইস ব্রান অয়েল তৈরির সময় উপাদান মানসম্মত না হলে কিংবা সঠিক উপায়ে স্টোরেজ না করলে সেটি শনাক্ত করা সম্ভব। কারণ, একটু গরমিল হলেই এর স্বাদ, বর্ণ ও গন্ধ পরিবর্তন হয়ে যায়। আতঙ্কের বিষয় হলো, বাজার থেকে সংগ্রহ করা বেশ কিছু নমুনা খালি চোখে ‘অর্গানোল্যাপটিক ক্যারেক্টার’ পরীক্ষা করে এতে প্রায় ৪০ শতাংশের মধ্যে দেখা গেছে যে এগুলোর স্বাদ, বর্ণ ও গন্ধে পরিবর্তন এসেছে।
বাজারের অন্য সব রাইস ব্রান অয়েলের চেয়ে ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েলের রয়েছে সুস্পষ্ট পার্থক্য। কারণ, গুণগত মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে ফরচুন আপসহীন। কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে সংরক্ষণ এবং তেল উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের প্রতিটি ধাপেই থাকে তীক্ষ্ণ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা। এ জন্য নিঃসন্দেহে ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েলের ওপর ভরসা রাখা যায়।
এ কথা সত্য, খাবারকে সুস্বাদু করতে অনেকে এতটাই মগ্ন থাকেন যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এর গুণাগুণের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয় না। তাই অনেকে রান্নায় প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করে থাকেন। এতে খাবারের স্বাদ বজায় থাকলেও খাদ্যগুণ প্রায় থাকে না বললেই চলে। ফলে এ–জাতীয় খাবার অধিক মাত্রায় গ্রহণের পর তাঁরা নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই প্রথমেই খাবার সুস্বাদু কি না, বিবেচনা না করে স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত।
তবে আনন্দের বিষয় হলো, ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েলের গুণগত মান কখনো এর স্বাদকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেনি; বরং রান্নায় এ বিশেষ ধরনের তেলের ব্যবহার যেন এর স্বাদে নতুন মাত্রা যোগ করে। আর গুণগত মান বিচারে অন্যান্য ভোজ্যতেলের চেয়ে এ তেলের দাম কিছুটা বেশি হলেও এটি পরিমাণে কম লাগে। তাই স্বাদ ও স্বাস্থ্যের সঠিক সংমিশ্রণে ফরচুন ফর্টিফায়েড রাইস ব্রান অয়েল বরাবরই সমাদৃত হয়ে আসছে।