শিশুদের হাড় মজবুত করতে কী খাওয়াবেন

মজবুত হাড় শিশুদের সুস্থ–সবল রাখার পাশাপাশি উচ্চতা বাড়াতেও সাহায্য করেছবি: প্রথম আলো

ভালো হাড়ের ভিত্তি ভ্রুণ অবস্থাতেই গড়ে ওঠে। ছোটবেলা থেকেই শিশুদের হাড় দ্রুত বিকশিত হয়, যে কারণে শৈশব থেকেই হাড় বিষয়ে যত্নশীল হতে হবে। মজবুত হাড় শিশুদের সুস্থ–সবল রাখার পাশাপাশি উচ্চতা বাড়াতেও সাহায্য করে। দেয় আঘাত থেকে সুরক্ষা। ছোটবেলা থেকেই হাড় মজবুত করতে প্রয়োজন যথাযথ পুষ্টি। হাড়ের সুস্থতায় প্রয়োজন এমন পুষ্টিকর খাদ্য, যা একদিকে যেমন হাড় মজবুত করবে, অন্যদিকে ওজনও রাখবে নিয়ন্ত্রণে।

জেনে নেওয়া যাক, হাজ মজবুত করতে কী প্রয়োজন, সেগুলো কোন খাবারে থাকে।

ক্যালসিয়াম

হাড়ের সুস্থতায় সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান হলো ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম শুধু হাড় নয়, হৃৎপিণ্ড, স্নায়ু ও মাংসপেশি মজবুত করতেও সাহায্য করে। যে কারণে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকা প্রয়োজন। কারণ, ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিলে হাড় থেকেই ক্যালসিয়াম টেনে নেয় শরীর। যে কারণে প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসেই সবুজ ও রঙিন শাকসবজি, মাছ, মাংসের মতো ক্যালসিয়ামজাতীয় খাদ্য থাকা প্রয়োজন।

শিশুর প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসেই সবুজ ও রঙিন শাকসবজি, মাছ, মাংসের মতো ক্যালসিয়ামজাতীয় খাদ্য থাকা প্রয়োজন
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

ভিটামিন ডি

ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান হলো ভিটামিন ডি। রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ ঠিক রাখতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ভিটামিন ডি। মায়ের বুকের দুধ থেকে যে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, তা হাড়ের বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত নয়। যে কারণে শিশুদের সকালে সূর্যের নরম আলোয় রাখা উচিত। এ ছাড়া ভিটামিন ডি–সমৃদ্ধ খাবার, যেমন ডিম, দুগ্ধজাতীয় খাবারের প্রতি জোর দেওয়া উচিত।

শিশুকে প্রতিদিন একটি ডিম খাওয়ান
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

আঁশজাতীয় খাবার

হাড়ের যত্নে আঁশজাতীয় খাবার? শুনে হয়তো একটু চমকে উঠেছেন, কিন্তু পানিতে দ্রবীভূত আঁশজাতীয় খাবার হাড়ের জন্য বেশ উপকারী। বিশেষ করে কলা, গম, মধুতে থাকা আঁশ পেটে গিয়ে জেলির আকার ধারণ করে। শিশুদের হাড়ের বিকাশে বেশ উপকারী এ–জাতীয় খাবার।

শিশুকে দুধ ও কলা খাওয়াবেন
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

ভিটামিন কে ও ম্যাগনেশিয়াম

ক্যালসিয়ামের সঙ্গে সঙ্গে এই দুই উপাদানও হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে। সবুজ শাকসবজি, বিশেষ করে ফুলকপি ও বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন কে ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে।

যত কম চিনি, তত ভালো


শিশুর পাকস্থলীতে এমনিতেই খুব কম পরিমাণ জায়গা থাকে। অযথা চিনিজাতীয় খাবার যেমন জুস, কোল্ড ড্রিংকস দিয়ে সেই জায়গা নষ্ট করবেন না। বরং পুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ খাবার দিয়ে যতটুকু সম্ভব পেট ভরানোর চেষ্টা করুন।

শরীরচর্চা করান


হাড়কে মজবুত ও কর্মক্ষম করতে শরীরচর্চার বিকল্প নেই। ছোটবেলা থেকেই নিয়মিত হাঁটাচলা, হাত–পা ম্যাসাজ করে দেওয়া, গানের তালে তালে তার হাত–পা নাড়ানো, শিশুর সঙ্গে খেলা ইত্যাদি কার্যক্রমের মধ্যে যাতে শিশু থাকে, সেদিকে নজর রাখবেন। ছয় মাস বয়স থেকেই শিশুরা হামাগুড়ি দেওয়া শুরু করে। শিশুদের এসব কাজে উৎসাহ দেবেন। এতে নিজে থেকেই হাড়ের স্বাভাবিক বৃদ্ধি হবে। তবে খেয়াল রাখবেন, শিশুদের হামাগুড়ি দেওয়া বা হাঁটাচলার জায়গা যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। আর শিশু যাতে পড়ে গিয়ে ব্যথা না পায়। এতে শিশুদের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশেই কমে আসবে।


তথ্যসূত্র: ডিএনএ ইন্ডিয়া