কোনো খাবারই হজম না হলে কী করবেন

কী কী খাবার খেলে সমস্যা হয়, তা বোঝার জন্য একটা ডায়েরি মেনটেন করতে হবে
ছবি : প্রথম আলো

বদহজমের সমস্যা একেকজনের একেক রকমভাবে দেখা দেয়। কারও কারও ক্ষেত্রে হজমের সমস্যা মানে সারাক্ষণ পেট ফেঁপে থাকা, বমি ভাব হওয়া, মুখে রুচি না হওয়া। আবার কারও ক্ষেত্রে কিছু উল্টোপাল্টা খেলেই নরম পায়খানা হওয়া বা বারবার হওয়া। কারও আবার কিছু খেলে পেট মোচড় দেয়, পেটব্যথা করে পায়খানা হয়।

কখনো কখনো ডায়রিয়া অথবা গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস (পাকস্থলী এবং খাদ্যনালির প্রদাহ) হওয়ার পরে কয়েক সপ্তাহজুড়ে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। অনেকে আবার দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের সমস্যায় ভোগেন। অনেক পরীক্ষা–নিরীক্ষার পরও কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। এ ধরনের সমস্যাকে ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা আইবিএস বলে। এ রোগের উপসর্গ কারও কারও ক্ষেত্রে খুবই মৃদু হয় এবং তেমন কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু কারও কারও উপসর্গ এত বেশি যে তাদের জীবনযাত্রার মান ব্যাহত হয়।

আরও পড়ুন

রোগীর ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে

১. দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়া। অবশ্য সবার ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য না। কারও কারও ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের (দুধে যে শর্করা থাকে তাকে বলে ল্যাকটোজ, এ–জাতীয় খাবারে অসহিষ্ণুতা) সমস্যা থাকে। তাদের ক্ষেত্রে এটা বাদ দিলে উপকার মেলে।

২. ক্যাফেইন (চা/কফি), মদ অথবা নেশাজাতীয় পানীয়, কোমল পানীয় না খাওয়া। ধূমপান পরিহার করা।

৩. পাকা কলা, আপেল, গাজর, কিশমিশ, পটেটো চিপস, চানাচুরজাতীয় খাবার না খাওয়া। কারণ, খাবারগুলো অনেক ক্ষেত্রে পেটে গ্যাস হওয়ার প্রভাব বাড়াতে পারে।

৪. কী কী খাবার খেলে সমস্যা হয়, তা বোঝার জন্য একটা ডায়েরি মেনটেন করা যায়। যেদিন বদহজম বেশি হয়েছিল, সেদিন কী কী খেয়েছিলেন, তা লিখে রাখতে হবে।

৫. প্রতিদিন ইসবগুলের ভুসি খেয়ে পেট পরিষ্কার রাখলে কারও কারও উপকার হয়।

৬. নিয়মিত আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা করে শারীরিক ব্যায়াম করা।

৭. যোগব্যায়াম অথবা মেডিটেশন থেকে অনেকে উপকার পেতে পারেন।

এ সাবধানতাগুলো কয়েক মাস পালন করলে অনেকের হজমের সমস্যাজনিত উপসর্গ কমে আসতে পারে।

কখন জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন?

১. যদি ওজন কমে যায়।

২. বমি অথবা পায়খানার সঙ্গে রক্ত যায়।

৩. পায়খানার চাপের জন্য রাতে বারবার ঘুম ভেঙে বাথরুমে যেতে হয়।

৪. যদি রক্তশূন্যতা হয়।

অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট

মেডিসিন বিভাগ,

স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, পান্থপথ, ঢাকা।