কফি কখন খাওয়া ভালো, কখন ক্ষতির কারণ
এক কাপ কফি খেয়ে সতেজ হয়ে উঠতে পারেন সহজেই। তবে কফির উপকার সবচেয়ে বেশি পেতে আপনাকে কফি খেতে হবে ঠিক সময়ে। ভুল সময়ে কফি খেয়ে কিছু সমস্যায়ও পড়তে পারেন। এ প্রসঙ্গে রাফিয়া আলমকে জানালেন ঢাকার পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নওসাবাহ্ নূর।
কফি কখন খাবেন না
ঘুম থেকে উঠেই কফি না খাওয়া ভালো। কফি আমাদের দেহের পানির চাহিদা মেটানোর মতো পানীয় নয়। কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পরই আমাদের পানি প্রয়োজন হয়। তাই পানি কিংবা অন্যান্য পানীয় খাওয়ার অভ্যাস করুন এ সময়।
ঘুম থেকে ওঠার পর দেহে প্রাকৃতিক নিয়মেই কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেশি থাকে। এই হরমোন আমাদের কর্মক্ষম হয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন। এই সময় কফি খেয়ে আলাদাভাবে কর্মক্ষম হয়ে ওঠার প্রয়োজন পড়ে না।
বরং এই সময় কফি খেলে এর ক্যাফেইন এবং দেহে থাকা উচ্চমাত্রার কর্টিসল হরমোনের মিলিত প্রভাবে খানিকটা অস্থিরতায় ভুগতে পারেন আপনি।
বরং দিনের যে সময়ে দেহে কর্টিসলের মাত্রা কমতে থাকে, চনমনে হয়ে উঠতে কফি প্রয়োজন তখন। অন্যদিকে বিকেলের শেষ দিকে, সন্ধ্যায় বা রাতে কফি খেলে তা আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
এ ছাড়া এটাও মাথায় রাখতে হবে, খালি পেটে কফি খেলে অ্যাসিডিটিতে ভুগতে পারেন কেউ কেউ। আবার খাবার খাওয়ার পরপরই কফি খেলেও হতে পারে হজমজনিত সমস্যা।
কিছু ওষুধের ওপর কফির নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই ওষুধ খাওয়ার ঠিক আগে বা ঠিক পরপরই কফি না খাওয়া ভালো।
কফি কখন খাবেন
সকালে ঘুম থেকে ওঠার ঘণ্টা দুয়েক পর থেকে আমাদের দেহে কর্টিসলের মাত্রা কমতে থাকে। তাই ঘুম থেকে ওঠার দু-চার ঘণ্টা পর এক কাপ কফি খেতে পারেন।
কাজে উদ্যম এবং মনোযোগ ধরে রাখার জন্য এ সময়ের এক কাপ কফি দারুণ কাজে আসে। চাইলে বিকেলের প্রথম ভাগেও কফি খেতে পারেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজের শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করবে এই সময়ের কফি।
কিংবা ব্যায়াম করার এক-দেড় ঘণ্টা আগেও কফি খেয়ে নিতে পারেন। এই সময় কফি খেলে পূর্ণোদ্যমে ব্যায়াম করতে পারবেন।
খাবার খাওয়ার মিনিট বিশেক পর কফি খেলে হজমে সমস্যা হয় না। ওষুধ খাওয়ার দেড়-দু ঘণ্টা পর কফি খাওয়া ভালো।
রোজ কতটা কফি খাবেন
আপনি ঠিক কী ধরনের কফি খাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করছে আপনি রোজ কতটা কফি খেতে পারেন। তবে গড়পড়তা একটা হিসাব হতে পারে।
সেই হিসাব অনুযায়ী, রোজ দু-তিন কাপের বেশি কফি না খাওয়াই ভালো। বড় মগে কফি খেতে চাইলে সেটি এই দু-তিনবারের মধ্যে কেবল একবারের জন্যই থাকুক।
তবে যাঁদের ক্যাফেইনের প্রতি সংবেদনশীলতা আছে, তাঁদের জন্য পরিমাণটা আরও কম রাখা প্রয়োজন। আর তাঁদের অবশ্যই হালকা ধরনের কফি বেছে নেওয়া উচিত।