মশা দূরে থাকবে এসব অনুষঙ্গ ব্যবহারে

মশা প্রতিরোধক হিসেবে বেশ পরিচিত মশা তাড়ানোর ক্রিম। অল্প করে হাতে-পায়ে লাগিয়ে নিলে মশা থেকে অনেকটাই নিস্তার পাওয়া সম্ভব। লিপজেলের স্টিকের মতো দেখতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফ্যাব্রিক রোল-অন ও কাজে দেয়।

মশা প্রতিরোধক স্টিকার সহায়তা করবে মশা দূরে রাখতেছবি: কবির হোসেন

ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বড়রা বুঝলেও ছোটদের কে বোঝাবে? এ নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই! কোনোভাবেই তাদের যেন মশা না কামড়ায়, সেদিকে খুব খেয়াল রাখতে হচ্ছে আজকাল। মশার থেকে বাঁচতে অনেকেই নানা উপায় অবলম্বন করছেন। মশার কামড় থেকে বাঁচতে ব্যবহার করতে পারেন এ যুগের আধুনিক কিছু উপকরণ।

মশা দূরে রাখার অনুষঙ্গ
ছবি: কবির হোসেন

মশা প্রতিরোধক স্টিকার

বাচ্চাদের খেলনা স্টিকারের মতো দেখতে রঙিন এই মশা প্রতিরোধকে রয়েছে সিট্রোনেলা তেল; যার মূল কাজ কীটপতঙ্গ দূরে রাখা। রাসায়নিক উপাদানমুক্ত, উদ্ভিদভিত্তিক এই তেলের গন্ধ মশা তাড়াতে বেশ কার্যকর বলে জানালেন ফার্মগেটে অবস্থিত লাজফার্মার ম্যানেজার মোহাম্মদ হাসনাত। মশা দূরে রাখতে শিশুদের পোশাকের সামনে পেছনে মশা প্রতিরোধক স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এটি প্রায় ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত মশা থেকে সুরক্ষা দেবে। স্টিকারের প্রতি পাতার দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।

কাপড়ের ওপর লাগাতে হবে ফ্যাব্রিক রোল–অন
ছবি: কবির হোসেন

ফ্যাব্রিক রোল-অন

লিপজেলের স্টিকের মতো দেখতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফ্যাব্রিক রোল-অন পাওয়া যায়। সিট্রোনেলা ও ইউক্যালিপটাস তেল দিয়ে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি করা হয় এটি। শিশু থেকে বড়—যে কারও পোশাকের ওপর ঘষে লাগিয়ে নিলে মশা দূরে থাকবে। তবে মনে রাখতে হবে, এটি ত্বকে ব্যবহারের জন্য নয়। ফ্যাব্রিক রোল-অন শুধু পোশাকের ওপরই ব্যবহার করতে হবে। প্রায় ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত মশা থেকে সুরক্ষা দিতে পারে এটি। দাম ১০০ থেকে ২৫০ টাকা।

মশা প্রতিরোধক ক্রিম
ছবি: কবির হোসেন

ক্রিম

মশা প্রতিরোধক হিসেবে বেশ পরিচিত মশা তাড়ানোর ক্রিম। অল্প করে হাতে-পায়ে লাগিয়ে নিলে মশা থেকে অনেকটাই নিস্তার পাওয়া সম্ভব। এটি তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় সিট্রোনেলা তেল, অ্যালোভেরা ও বাদামের তেল। ত্বকের জন্য এই ক্রিম ক্ষতিকর নয়। তাই সাধারণ ক্রিমের মতো এটি ব্যবহার করা যায়। ত্বকে লাগিয়ে নেওয়ার পর ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে। দুই মাস বয়সী শিশু থেকে শুরু করে যে কেউ এই ক্রিম ব্যবহার করতে পারবেন। বারডেম হাসপাতালের মা ও শিশু বিভাগের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক ডা. ফাহমিদা রহমান বলেন, ‘স্কুলে যাওয়ার সময় শিশুদের হাত-পা কিংবা পোশাকে অল্প করে এই ক্রিম লাগিয়ে দেওয়া যেতে পারে, তবে এ জাতীয় কোনো কিছু মুখের ত্বকে লাগানো যাবে না। অ্যালার্জির সমস্যা হবে কি না, সেটা বুঝতে হাতের ত্বকে অল্প একটু জায়গায় লাগিয়ে নিন। র‍্যাশ দেখা দিলে এই ক্রিম ব্যবহার করা যাবে না।’ দাম ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা।

মশা প্রতিরোধক স্প্রে

বাজারে প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক, দুই ধরনের মশার স্প্রে পাওয়া যায়। এটি কাপড়ের ওপর এবং উন্মুক্ত ত্বকে ব্যবহার করা যায়। তবে কাপড়ের নিচে কিংবা ঢেকে রাখা ত্বকে ব্যবহার করা যাবে না। খেয়াল রাখতে হবে, স্প্রে করার সময় চোখে যেন না যায়। অ্যালার্জির সমস্যা বুঝতে আগে অল্প করে হাতে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখুন সমস্যা হচ্ছে কি না। একবার স্প্রে করলে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এটি মশা থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। দাম ১০০ থেকে ৩০০ টাকা।

স্প্রে করার সময় চোখে যেন না যায়
ছবি: কবির হোসেন

মশা মারার বৈদ্যুতিক যন্ত্র

শুধু মশাই নয়, মাছিসহ অন্যান্য পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচাবে বৈদ্যুতিক ল্যাম্প। ব্যাটও হতে পারে উপকারী সঙ্গী। দুটির কাজ করার পদ্ধতি প্রায় এক রকম। বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে ঘরের এককোণে রেখে দিলেই সেটি মশা মারার কাজ করে। ব্যাট হাতে নিয়ে নিজের কিছুটা কষ্ট করতে হয়।

মশা মারার বৈদ্যুতিক ব্যাট
ছবি: কবির হোসেন

সুইচ অন অবস্থায় মশা-মাছি এগুলোর ভেতরে প্রবেশ করলে সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। খেয়াল রাখবেন, শিশুরা যেন কোনোভাবেই এগুলোতে হাত না দেয়। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে না চাইলে বড়দেরও সাবধান থাকা প্রয়োজন। বৈদ্যুতিক ব্যাটের দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং বাতি পেয়ে যাবেন ৫৫০ থেকে ১ হাজার টাকার এর মধ্যে।