জন্মবিরতিকরণ বড়ির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশে জন্মনিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে প্রচলিত ও কার্যকর পদ্ধতিগুলোর একটি জন্মবিরতিকরণ পিল বা বড়ি। নিয়মিত সঠিকভাবে খেলে গর্ভধারণ প্রতিরোধে এটি অত্যন্ত নিরাপদ ও কার্যকর। তবে অন্যান্য ওষুধের মতো এটিরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। বিশেষত এর নিউরোলজিক্যাল বা স্নায়বিক ঝুঁকির বিষয়ে জানা থাকা ভালো। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বড়ি সম্পূর্ণ নিরাপদ হলেও কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এটি কিছু বিরল ক্ষেত্রে নিউরোলজিক্যাল জটিলতা বাড়াতে পারে।
মাইগ্রেন ও মাথাব্যথা
যেসব নারীর মাইগ্রেনের প্রবণতা আছে, বড়ি খাওয়া শুরু করলে তাঁদের মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে। হরমোনের মাত্রা ওঠা-নামার কারণে এমনটি হয়ে থাকে।
স্ট্রোকের ঝুঁকি
গবেষণায় দেখা গেছে, জন্মবিরতিকরণ বড়ির প্রভাবে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা সামান্য বাড়াতে পারে। এ কারণে অল্পসংখ্যক নারীর ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের ধমনিতে ক্লট বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে। যাঁদের আগে থেকেই মাইগ্রেন, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপানের অভ্যাস বা রক্ত জমাট বাঁধার পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা তুলনামূলক বেশি। তবে সাধারণত সুস্থ নারীদের জন্য এই ঝুঁকি খুবই কম।
সঠিকভাবে খেলে গর্ভধারণ প্রতিরোধে এটি অত্যন্ত নিরাপদ ও কার্যকর। তবে অন্যান্য ওষুধের মতো এটিরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে।
কখন বুঝবেন আপনি ঝুঁকিতে
অধিকাংশ নারীই তাঁদের প্রজনন বয়সের (১৫-৪৮ বছর বয়স) দীর্ঘ সময় ধরে নিরাপদে জন্মবিরতিকরণ বড়ি সেবন করতে পারেন। তবে একটানা কত দিন বড়ি খাওয়া নিরাপদ, তা নির্ভর করে বয়স, স্বাস্থ্যগত ইতিহাস কিংবা সমস্যা আর পিলের ধরনের ওপর। তবে মাঝপথে গর্ভধারণ বা ডোজ পরিবর্তন করার প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। জন্মবিরতিকরণ বড়ি সেবন শুরুর পর যদি নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখেন তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি।
তীব্র ও অস্বাভাবিক মাথাব্যথা, যা আগে কখনো হয়নি বা মাইগ্রেনের পরিচিত ধরন নয়।
কথা বলতে অসুবিধা বা হঠাৎ দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া কিংবা দৃষ্টিশক্তি হারানো।
হঠাৎ শরীরের এক পাশে অথবা নিম্নাংশে দুর্বলতা বা অসাড়তা।
পেটে, বুকে বা পায়ে তীব্র ব্যথা, যা রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ হতে পারে।
যদি এমন কোনো লক্ষণ দেখা যায়, তবে দ্রুত বড়ি খাওয়া বন্ধ করে রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া উচিত।
ডা. হিমেল বিশ্বাস: ক্লিনিক্যাল স্টাফ, স্কয়ার নিউরোসায়েন্স সেন্টার, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা