বয়স ৪০ পেরোনোর পর থেকেই শরীরে নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। হরমোনের ওঠানামা, শক্তির ঘাটতি, হাড়ে ব্যথা, কিংবা মনোযোগ কমে যাওয়ার মতো বিষয় ঘটে। বয়স বাড়লেও প্রাণশক্তি ধরে রাখা সম্ভব, যদি আমরা প্রতিদিনের খাবার নিয়ে একটু সচেতন হই। পুষ্টি শুধু রোগপ্রতিরোধে নয়, শরীরের প্রতিটি কোষের পুনর্গঠন, মানসিক ভারসাম্য ও তারুণ্য ধরে রাখারও মূল চাবিকাঠি।
অস্থিসন্ধি ও হাড়ের যত্নে সঠিক খাবার
ইলিশ, রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, সামুদ্রিক মাছ, ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও প্রোটিনে সমৃদ্ধ।
দুধ, টক দই, পনির, ছানা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি জোগায়।
হলুদ ও আদা রান্নায় নিয়মিত ব্যবহার করলে প্রদাহ কমে।
তিল, চিনাবাদাম, বাদাম, চিয়া সিড, তিসির বীজ অস্থিসন্ধিতে ভালো ফ্যাট সরবরাহ করে।
পালংশাক, লালশাক, কলমিশাক, পুঁইশাক, মিষ্টিকুমড়ার পাতা হাড়ের জন্য চমৎকার।
ডিমে প্রোটিন ও ভিটামিন ডি উভয়ই আছে। তাজা মাছের তেল বা শর্ষের তেল বেশ উপকারী।
মস্তিষ্ক ও স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর খাবার
বয়সের সঙ্গে মনোযোগ ও স্মৃতি ধরে রাখতে দরকার অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই ও ওমেগা–৩ সমৃদ্ধ খাবার।
পাতাযুক্ত সবজি যেমন পালংশাক, লালশাক, ব্রকলি, ফুলকপি/লাউপাতা।
ফলমূল যেমন পেয়ারা, আপেল, ডালিম, আঙুর, কলা, কমলা, কাঁঠাল, আম, জাম। আখরোট, কাজুবাদাম, চিনাবাদাম।
পূর্ণ শস্য যেমন লাল চাল, ওটস, লাল আটার রুটি। চা ও গ্রিন টি, হালকা ক্যাফেইন মনোযোগ বাড়ায়।
ডার্ক চকলেট (৭০ শতাংশ কোকো) মাঝেমাঝে অল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী শক্তির জন্য খাবার
ওটস, চিড়া, লাল চালের ভাত, রুটি। মসুর, মুগ, মাষকলাই, ছোলা প্রোটিন ও ফাইবারে ভরপুর।
ডিম, মাছ, মুরগি শরীরের টিস্যু ও পেশি রক্ষা করে।
কলা, আপেল, পেঁপে, খেজুর, নারকেলপানি।
করলা, গাজর, লাউ, মিষ্টি আলু, কুমড়া ভিটামিন ও ফাইবারে ভরপুর।
পানি ও হারবাল ড্রিংকস, লেবুপানি, তুলসী–চা, আদা-চা, ডাবের পানি।
প্রতিদিনের খাবারের পরিকল্পনা
এক ভাগ প্রোটিন: মাছ, ডিম বা ডাল।
দুই ভাগ সবজি: শাক, লাউ, করলা, গাজর, পুঁইশাক ইত্যাদি।
এক ভাগ শস্য: লাল চাল বা আটার রুটি।
একটা ফল: পেয়ারা, কলা বা যেকোনো টকজাতীয় ফল।
এক গ্লাস পানি বা টক দই: হজমে সহায়ক ও শরীর ঠান্ডা রাখে।
ফারজানা ওয়াহাব, পুষ্টিবিদ, আলোক হাসপাতাল, মিরপুর-৬, ঢাকা