মেয়াদ শেষ হলে যেসব খাবার অবশ্যই ফেলে দিতে হবে
খাবার বা খাদ্য উপকরণ ভালো আছে কি না, তা বোঝার জন্য নাকের কাছে নিয়ে ঘ্রাণ নেন অনেকেই। তবে এই উপায় সব ক্ষেত্রে কাজে আসে না। চমৎকার ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে, এমন খাবারও কখনো কখনো অনিরাপদ হতে পারে। কিছু খাবার বা খাদ্য উপকরণ মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে অবশ্যই ফেলে দিতে হবে আপনাকে, সেটির ঘ্রাণ যেমনই থাকুক না কেন।
কত দিনের মধ্যে খাবার বা খাদ্য উপকরণটি ব্যবহার করে ফেলা উচিত, সে বিষয়ক নির্দেশনা দেওয়া থাকে পণ্যের মোড়ক, বোতল বা বয়ামে।
নির্দিষ্ট তারিখের আগে লেখা থাকে ‘মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ’, ইংরেজিতে থাকে—‘বেস্ট বিফোর’, ‘এক্সপায়ারি ডেট’ বা ‘ডু নট ইউজ আফটার’।
কোনটি দিয়ে কী বোঝানো হচ্ছে, তা জানা থাকা প্রয়োজন। তারিখ পেরিয়ে গেলে কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত নয়, তা–ও জানা জরুরি। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
কোন তারিখে কী বোঝায়
‘ডু নট ইউজ আফটার’ কিংবা ‘এক্সপায়ারি ডেট’ পেরিয়ে গেলে সেই খাবার বা খাদ্য উপকরণ আর ব্যবহার করতে নেই। এই তারিখ খাদ্যনিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত। স্বাদ এবং ঘ্রাণ ভালো থাকলেও তারিখ পেরিয়ে যাওয়ার পর এসব কোনোক্রমেই ব্যবহার করা যাবে না। তাতে অসুস্থতার ঝুঁকিতে পড়বেন আপনি।
অন্যদিকে, ‘বেস্ট বিফোর’ লেখা থাকার অর্থ হলো ওই তারিখের ভেতর ওই খাদ্য উপকরণটি ব্যবহার করা হলে সর্বোত্তম মান বজায় থাকবে। তবে ওই তারিখ পেরিয়ে গেলেই তা অনিরাপদ হয়ে পড়বে, এমনটা নয়। অবশ্য এই তারিখ পেরিয়ে গেলে মানের সঙ্গে আপস করতে হতে পারে। ফ্রোজেন কিংবা শুকনা খাবারে এমন তারিখ লেখা থাকে।
মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে যেসব খাবার কখনোই ব্যবহার করতে নেই
প্যাকেটজাত তরল দুধ
প্যাকেটজাত তরল দুধ ফ্রিজে রাখা হলেও সর্বোচ্চ ৭ দিন ভালো থাকতে পারে। এরপর জীবাণু জন্মাতে পারে দুধে। তাই উল্লিখিত তারিখ পেরিয়ে গেলে সেই দুধ খাবেন না বা তা দিয়ে কিছু তৈরি করবেন না। ফ্রিজের ভেতর দিকটায় (অর্থাৎ দরজার কাছাকাছি নয়) তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকে। দুধের প্যাকেট এই জায়গায় রাখা ভালো।
বেকিং পণ্য
কেক মিক্স, বেকিং পাউডার বা বেকিং মিক্স, ইস্ট, জ্যাম, জেলি প্রভৃতি উপকরণের তারিখ পেরিয়ে গেলে ব্যবহার করবেন না। উল্লিখিত তারিখ পেরিয়ে গেলে ঠিকঠাক কাজে আসবে না এসব উপকরণ। কোনো খাবারে তা ব্যবহার করলে কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্যটি না-ই পেতে পারেন।
নরম পনির
নরম পনির সাধারণত এক-দুই সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকে। পনিরটা কোন ধরনের, তার ওপর নির্ভর করছে এটা ঠিক কত দিন ব্যবহার করা যাবে। সেই অনুযায়ীই তারিখ উল্লেখ করা থাকে।
তারিখ পেরিয়ে গেলে কোনোক্রমেই কোনো নরম পনির ব্যবহার করবেন না। কারণ, এসবে জীবাণু জন্মায় খুব সহজে। উল্লিখিত তারিখের আগেও যদি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ন্যূনতম লক্ষণ দেখা দেয়, অবশ্যই ফেলে দিন।
বয়াম বা বোতলে রাখা কন্ডিমেন্ট
খাবারের স্বাদ বাড়াতে নানা রকম কন্ডিমেন্ট ব্যবহার করা হয়। সস, কেচাপ, মেয়োনেজ, কাসুন্দি, কিমচি এবং এ ধরনের আরও উপকরণ আছে কন্ডিমেন্টের তালিকায়। বয়াম বা বোতলে রাখা এসব কন্ডিমেন্টের কোনোটির মেয়াদ থাকে এক মাস, কোনোটির হয়তো এক বছর।
যে তারিখটি যে কন্ডিমেন্টের জন্য উল্লেখ করা হয়েছে, তা পেরিয়ে গেলে সেটি আর ব্যবহার করবেন না। মেয়াদ ফোরানোর আগে ঘ্রাণ বা রং বদলে গেলেও সেটি আর ব্যবহার করবেন না।
কাচের বয়াম বা বোতলে করে ফ্রিজে রাখা আছে মানেই যে তাতে জীবাণু জন্মাবে না, তেমনটা কিন্তু নয়। তা ছাড়া এসব পণ্য ব্যবহার করার সময়ও সতর্ক থাকা উচিত, যেন বয়াম বা বোতল থেকে বের করার পর তা আবার তাতে উঠিয়ে রাখা না হয়।
ফলের রস
ফলের রস সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। প্রক্রিয়াজাত করে ফলের রসকে সংরক্ষণের উপযোগী করে বাজারজাত করা হয়। তবে বাজারের সব ধরনের ফলের রস আবার একইভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয় না। প্যাকেট বা বোতলে উল্লিখিত তারিখ খেয়াল করুন। তারিখ পেরিয়ে গেলে এসব আর নিরাপদ থাকে না।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট, ওয়েবএমডি, ফুড স্ট্যান্ডার্ডস এজেন্সি