হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিস হলেই কি চেয়ারে বসে কাজকর্ম করতে হবে?

অস্টিওআর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের প্রায় ৬০ শতাংশেরই হাঁটু আক্রান্ত হয়। হাঁটুর অস্থি ও তরুণাস্থির ক্ষয়ের কারণে গঠনগত পরিবর্তন হয়ে এমনটা হয়। হাঁটুর বয়সজনিত ক্ষয়বাতও একে বলে। এর কারণে বয়স্ক ব্যক্তিদের হাঁটুব্যথা ও হাঁটাচলায় কষ্ট হয়। অনেকে চেয়ারে বসে নামাজ বা রান্নার কাটাকুটি করেন। অস্টিওআর্থ্রাইটিসের বেশির ভাগ রোগী হাঁটুব্যথা আছে বলে হাঁটেন না। কিন্তু এটা ঠিক নয়। চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করার কারণে রোগীর হাঁটুর নড়াচড়া আরও কমে যায়, যার কারণে ধীরে ধীরে জয়েন্ট আরও বেশি শক্ত হয়ে যায়, যা রোগীকে পুরোপুরি প্রতিবন্ধিতার দিকে ঠেলে দেয়। রোগী আর কখনো হাঁটুর স্বাভাবিক নড়াচড়া করতে পারেন না। আর অস্টিওআর্থ্রাইটিসে সমতল পথে হাঁটতে কোনো নিষেধ নেই, বরং যত সচল থাকবেন, ততই ভালো। তা ছাড়া ওজন হ্রাস এই রোগে বড় উপকার বয়ে আনে। হাঁটাহাঁটি ও ব্যায়াম বন্ধ করে দিলে ওজন বেড়ে যাবে।

অস্টিওআর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের প্রায় ৬০ শতাংশেরই হাঁটু আক্রান্ত হয়
ছবি: সংগৃহীত

যা করা যাবে না

  • দ্রুত দৌড়ানো যাবে না, বিশেষ করে অসমতল স্থানে।

  • টেনিস, বাস্কেটবলের মতো যেসব খেলায় দ্রুত হাঁটুর অবস্থান পরিবর্তন করতে হয়, তা খেলা যাবে না।

  • যেসব কাজে লাফাতে হয়, যেমন স্কিপিং, লাফ, অ্যারোবিকস, এগুলো করা যাবে না।

যা উপকারী

হাঁটাহাঁটি, সাঁতার, বাইক বা সাইকেল চালানো, ইলিপটিক্যাল মেশিনে হাঁটা, পেশির বল বাড়ানোর ব্যায়াম।

অস্টিওআর্থ্রাইটিস মানেই কি বিশ্রাম?

না। শুরুর দিকে যদি ব্যথা অনেক বেশি তীব্র হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ বিশ্রাম নেবেন, চেয়ারে বসে নামাজ বা অন্য কাজ করবেন। ব্যথা কিছুটা কমে এলে চেয়ার ছেড়ে স্বাভাবিকভাবে কাজকর্ম শুরু করবেন, নামাজও স্বাভাবিকভাবে পড়বেন। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নির্দিষ্ট ব্যায়াম করবেন।

লেখক: যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এবং বিভাগীয় প্রধান, কেসি হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, উত্তরা।