যেসব পুষ্টি উপাদানের ঘাটতিতে ওজন বাড়তে পারে

বেশি খেলে ওজন বাড়ে, এ তো সবারই জানা। তবে খাবারদাবার কমাতে গিয়ে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান গ্রহণ কমিয়ে দিলেও কিন্তু মুশকিল। এমন বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যেসবের ঘাটতির পরোক্ষ প্রভাবে ওজন বাড়তে পারে। আর পুষ্টি উপাদানের ঘাটতির কারণে অন্যান্য শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি তো থাকেই। রোজকার জীবনধারায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে গিয়ে এমনভাবে হিতে বিপরীত হতে পারে আরও অন্য কোনো কারণে, তাতেও বাড়তে পারে ওজন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মতলেবুর রহমান জানান কোন কোন পুষ্টি উপাদানের অভাবে ওজন বাড়তে পারে—

এমন বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যেসবের ঘাটতির পরোক্ষ প্রভাবে ওজন বাড়তে পারেছবি: প্রথম আলো

আয়রন

বিপাকক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন হওয়ার জন্য দেহে পর্যাপ্ত আয়রন থাকা আবশ্যক। আয়রনের অভাবে দুর্বলতা বা ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন আপনি। এতে আপনার রোজকার শরীরচর্চাও ব্যাহত হতে পারে। এমন পরোক্ষ কারণে বাড়তে পারে আপনার ওজন। মাংস, কলিজা, ডিম, মসুর ডাল, কচুশাক এবং অন্যান্য গাঢ় সবুজ শাক, তরমুজ, খেজুর প্রভৃতিতে রয়েছে আয়রন। কেটে রাখলে কালো হয়ে যায়, এমন ফলেও আয়রন থাকে। উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আয়রন পেতে হলে এর সঙ্গে ভিটামিন সি-জাতীয় খাবার, অর্থাৎ টক ফলও গ্রহণ করুন। তবে মনে রাখবেন, উত্তাপে ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়।

আয়োডিন

ওজন কমানোর জন্য না হলেও রক্তচাপ ঠিক রাখা এবং হৃৎপিণ্ডের সুস্থতার কথা বিবেচনায় রেখে লবণ কম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে একেবারেই লবণ না খাওয়া বা অতিরিক্ত কমিয়ে দেওয়াও কিন্তু ঠিক নয়। এতে লবণের ঘাটতি যেমন হতে পারে, তেমনি হতে পারে আয়োডিনের ঘাটতিও। আয়োডিনের ঘাটতি হলে থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যক্ষমতা কমে যায়। আর তাতে কিন্তু ওজনও বাড়ে।

ভিটামিন বি

ভিটামিন ‘বি’র বেশ কয়েকটি ধরন রয়েছে। একসঙ্গে এগুলোকে বলা হয় ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। বিপাকক্রিয়ার জন্য ভিটামিন বি কাজে লাগে নানা ধাপে। এসব পুষ্টি উপাদান পাবেন নানা রকম শাকসবজি ও মাছ-মাংসে।

ম্যাগনেশিয়াম

ম্যাগনেশিয়াম বিপাকক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই সবুজ শাক, মটরশুঁটি, শিম, শস্যদানা ও বাদামের মধ্য থেকে অন্তত একটি গ্রহণ করুন, যাতে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি না হয়।

আমিষ

তিন বেলার মূল খাবারে আমিষজাতীয় উপাদান না রাখলে খাওয়ার অল্প সময় পরেই আবার খিদে অনুভূত হয়। তখন এটা-সেটা নাশতার খোঁজ করি আমরা। ভাজাপোড়া কিংবা কেক, বিস্কুট, চানাচুরের মতো খাবার খেয়ে হয়তো তখন ক্ষুধা মিটিয়ে নেন অনেকে। কিন্তু তাতে মোট ক্যালরি গ্রহণ কিন্তু বেড়ে যায় অনেকটাই। ওজন কমাতে হলে তাই পর্যাপ্ত আমিষ খাওয়া আবশ্যক। এই আমিষ প্রাণিজ উৎস থেকেই হতে হবে, তা কিন্তু নয়। এই যেমন, নানা রকম ডালের মিশ্রণও আমিষের দারুণ উৎস।

মোটকথা, ওজন কমানোর জন্য খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আপনি যাতে সুষম খাদ্যাভ্যাস থেকে নিজেকে বঞ্চিত না করেন, সেদিকে লক্ষ রাখা আবশ্যক।