মধুতে রসুন মিশিয়ে খাওয়া কি উপকারী?
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পেয়েছে মধুতে গাঁজানো রসুন। আদতেই কি এটি উপকারী? তা ছাড়া এটি সবাই খেতে পারবে কি না, সেও এক প্রশ্ন। এসব বিষয়ে টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান-এর সঙ্গে কথা বলেছেন রাফিয়া আলম।
রসুন এবং মধু দুটিই উপকারী প্রাকৃতিক উপাদান। একসঙ্গে এই দুটি গ্রহণ করলে আপনি কিছু উপকার নিশ্চয়ই পাবেন। তবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা ভুললে চলবে না।
উপকার যা কিছু
রসুন আর মধুতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কাজে আসে। শরীরকে ভেতর থেকে তরুণ রাখে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ত্বকে বয়সের ছাপ কম রাখতেও সাহায্য করে।
ঠান্ডা-কাশির মতো সমস্যা উপশমে মধু কাজে দিতে পারে।
মধুতে গাঁজানো রসুন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতেও সাহায্য করে। স্মৃতিভ্রমের ঝুঁকি কমায়।
হৃদ্রোগ প্রতিরোধেও রসুন আর মধু কিছুটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
যেখানে বিপত্তি
উপকারিতার তালিকা দেখে মনে হতে পারে, রসুন আর মধু রোজই খাওয়া উচিত। আদতে বিষয়টা এমন নয়। অ্যালার্জি বা কোনো বিশেষ কারণে রসুন বা মধু খেতে নিষেধাজ্ঞা না থাকলে কালেভদ্রে আপনি খানিকটা রসুন আর খানিকটা মধু খেতেই পারেন। কিন্তু নিয়মিত খেলে কিংবা বেশি পরিমাণে খেলে বাঁধতে পারে বিপত্তি।
অতিরিক্ত পরিমাণ রসুন গ্রহণ করা হলে রক্ত পাতলা হয়ে যেতে পারে। দেখা দিতে পারে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণের প্রবণতা।
খুব বেশি পরিমাণ রসুন খেলে হজমের সমস্যাতেও ভুগতে পারেন কেউ কেউ।
অন্যদিকে, মাত্র এক চা চামচ মধু থেকেই আপনি পাবেন প্রায় একুশ ক্যালরি। পরিমাণটা চিনির চেয়ে কম নয়। সারা দিনে আপনি অন্যান্য খাবারের সঙ্গে এই বাড়তি ক্যালরি গ্রহণ করলে আপনার মোট ক্যালরির পরিমাণ বাড়বে।
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ বা স্ট্রোকের মতো মারাত্মক রোগের জন্য দায়ী হতে পারে রোজ অত্যধিক ক্যালরি গ্রহণের মতো কোনো ‘সাধারণ’ অভ্যাস। নিয়মিত মধু-রসুন গ্রহণের মতো অভ্যাসের মাধ্যমে কিন্তু এসব ঝুঁকি থেকে আপনি বাঁচতে পারবেন না।
শেষ কথা
সুস্থ থাকতে জীবনধারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রসুন-মধু স্বাস্থ্যকর উপাদান গ্রহণের অভ্যাস আদতে আপনাকে সুস্থ রাখবে না। বরং শাকসবজি এবং ফলমূল থেকে আপনি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ প্রয়োজনীয় নানান পুষ্টি উপাদান পাবেন। সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মমাফিক শরীরচর্চা, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপমুক্ত জীবনযাপন সুস্থতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।