টনসিলের ফোড়া হলে চিকিৎসা

তীব্র প্রদাহের ফলে টনসিলের ওপর ও আশপাশে এবং টনসিলের ক্যাপসুলের পাশে পুঁজ জমা হয়, যাকে পেরিটনসিলার অ্যাবসেস বলা হয়। সচরাচর একে আমরা বলি টনসিলে ফোড়া হয়েছে। যথাযথ চিকিৎসা না করালে টনসিলের ইনফেকশনের জটিলতা থেকে এ রোগ হতে পারে।

এ সমস্যা হলে তীব্র গলাব্যথা ও জ্বর হয়। গলাব্যথার জন্য কিছু গিলতে কষ্ট হয়, এমনকি অনেক সময় মুখ হাঁ করতে কষ্ট হয়। টনসিলের ফোড়া সাধারণত বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়। টনসিলাইটিস বা টনসিলে প্রদাহ যদিও দুই পাশে হয়, কিন্তু পেরিটনসিলার অ্যাবসেস সব সময় এক পাশে হয়ে থাকে।

রোগের লক্ষণ

  • যদিও টনসিলের প্রদাহ শিশুদের মধ্যে বেশি, কিন্তু টনসিলের ফোড়া প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের বেশি হয়।

  • তীব্র গলাব্যথা।

  • উচ্চ তাপমাত্রা (১০৩ থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট)।

  • খাবার খেতে কষ্ট ও মুখ হাঁ করতে অসুবিধা।

  • কানে ব্যথা।

  • মুখ দিয়ে লালা বের হয় ও কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে যেতে পারে।

  • মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হতে পারে।

রোগীর গলা পরীক্ষা করলে দেখা যাবে, টনসিল ও টনসিলের উপরিভাগ, তালু লাল হয়ে ফুলে আছে। চিকিৎসা বিলম্ব করলে রোগীর মুখ হাঁ করতে কষ্ট হয় এবং আরও বিলম্ব হলে ফোড়া ফেটে পুঁজ বের হয়ে আসতে পারে।

জটিলতা 

  • ইনফেকশন শ্বাসনালি পর্যন্ত ছড়ালে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

  • গলার ভেতর সেলুলাইটিস হতে পারে।

  • সেপ্টেসেমিয়া বা ইনফেকশন সারা শরীরে ছড়াতে পারে।

  • পুঁজ ফুসফুসে গেলে নিউমোনিয়া হতে পারে।

চিকিৎসা

  • ছোট অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুঁজ বের করে দিতে হবে।

  • কালবিলম্ব না করে প্রথমে অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন এবং পরে মুখে খাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে।

  • ব্যথার জন্য ওষুধ দিতে হবে।

  • অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে গড়গড়া করতে হবে।

  • ছয় সপ্তাহ পর টনসিলের অস্ত্রোপচার করে নিলে ভালো হয়, না হলে একই সমস্যা আবার হতে পারে।

  • অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী, অধ্যাপক, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা