বাংলাদেশে ক্যানসারের সব ধরনের চিকিৎসাই সম্ভব

দেশে বাড়ছে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। অধিকাংশ রোগীর চিকিৎসাই হচ্ছে দেশে। আশার কথা, দেশে এখন ক্যানসারের সব ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতি চালু হয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন বহু মানুষ। তবে ক্যানসারের চিকিৎসার সুফল পেতে চিকিৎসার সময় এবং চিকিৎসার পরেও নিয়মিত ফলোআপ অর্থাৎ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকা আবশ্যক। এসব বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন  জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল হাই। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন—ডা. রাফিয়া আলম

প্রথম আলো:

একটা সময় ক্যানসার মানেই ছিল মৃত্যুর আশঙ্কা। বিশ্বজুড়ে সে চিত্র বদলেছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের কল্যাণে ক্যানসারকে জয় করছে মানুষ। ক্যানসারের চিকিৎসায় কতটা এগিয়েছে বাংলাদেশ?

অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল হাই: বাংলাদেশে এখন ক্যানসারের সব ধরনের চিকিৎসাই হচ্ছে। ক্যানসারে আক্রান্ত অঙ্গের শল্যচিকিৎসা, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, হরমোনথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি—সব ধরনের চিকিৎসাই বাংলাদেশে করা সম্ভব।

প্রথম আলো:

ক্যানসার চিকিৎসায় টার্গেটেড থেরাপি নামটি শোনা যায়। এটি আদতে কী ধরনের চিকিৎসা? এটিও কি বাংলাদেশে সম্ভব?

মো. আব্দুল হাই: কেমোথেরাপি বলতে যে ধরনের ওষুধকে বোঝানো হয়, সেগুলো ক্যানসারের কোষ ছাড়াও দেহের অন্যান্য সুস্থ কোষের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে নানান পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কিন্তু টার্গেটেড থেরাপিতে এমন ওষুধ নির্বাচন করা সম্ভব, যা নির্দিষ্টভাবে শুধু ক্যানসারের কোষের ওপরেই কাজ করবে, যাতে শরীরের সুস্থ কোষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে। বাংলাদেশেও টার্গেটেড থেরাপির ব্যবস্থা আছে।

প্রথম আলো:

এটা নিঃসন্দেহে দারুণ ব্যাপার যে আমাদের দেশেই আধুনিক পদ্ধতিতে ক্যানসারের চিকিৎসা করা সম্ভব। তবে দেশে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ক্যানসারের যে চিকিৎসা চালু আছে, তা কি রোগীর সংখ্যার তুলনায় যথেষ্ট?

মো. আব্দুল হাই: দেশে ক্যানসারের রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় চিকিৎসার সুযোগ একেবারেই অপ্রতুল। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর ক্যানসার বিভাগে রোগীদের চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করার প্রয়াস চলমান।

প্রথম আলো:

যেসব রোগী বাংলাদেশেই ক্যানসারের চিকিৎসা গ্রহণ করেন, তাঁদের মধ্যে কত ভাগ রোগী সুস্থ জীবনে ফিরে যান?

মো. আব্দুল হাই: আমাদের দেশের ক্যানসার চিকিৎসার সাফল্যের হার নির্ণয় করা বড় মুশকিলের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, আমাদের বহু রোগী ক্যানসারের চিকিৎসার পরে নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকেন না। ফলে তাঁদের পরবর্তী শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আর জানা সম্ভব হয় না।

প্রথম আলো:

ক্যানসারের চিকিৎসা তো বেশ ব্যয়সাপেক্ষ। দেশে চিকিৎসা নিলেও কি খরচ অনেক বেশি হয়?

মো. আব্দুল হাই: ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের দাম বেশি হওয়ায় এ চিকিৎসা ব্যয়বহুল। শল্যচিকিৎসা এবং অন্যান্য চিকিৎসাপদ্ধতি ব্যয়বহুল হওয়া সত্ত্বেও অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ক্যানসারের চিকিৎসার খরচ অনেকটাই কম।

প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।

মো. আব্দুল হাই: আপনাকেও ধন্যবাদ।