কোমরব্যথায় চাই যেমন বিছানা 

ব্যাক পেইন বা কোমরব্যথায় ভোগেননি, এমন মানুষের সংখ্যা বেশ কম। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৮৫ শতাংশ মানুষ জীবনের কোনো না কোনো সময় কোমরব্যথায় ভোগেন। সাধারণত ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কোমরব্যথার কারণ হলো মেকানিক্যাল বা আমাদের অবস্থানজনিত সমস্যা। যেমন ত্রুটিপূর্ণ বসা কিংবা শোয়া, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, উবু হয়ে কাজ করা ইত্যাদি।

আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, শোবার বিছানা সঠিক না হওয়ায় প্রায়ই কোমরব্যথা হয়ে থাকে। এমনিতেও যাঁরা কোমরব্যথায় আক্রান্ত, তাঁদের বিছানা নিয়ে সতর্ক হওয়া উচিত।

কেমন বিছানা চাই

  • শক্ত না নরম: চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে, কোমরব্যথায় আক্রান্ত রোগীদের শক্ত বিছানায় ঘুমানো উচিত। এই শক্ত মানে কতটা শক্ত? তাহলে কি কাঠের ওপর চাদর বিছিয়ে বা তোশক ছাড়া শুধু মেঝেতে ঘুমাতে হবে? আসলে তা নয়। শোবার বিছানা হতে হবে খুব নরম নয় আবার খুব শক্তও নয়, মাঝামাঝি রকমের। ইংরেজি পরিভাষায় যেটাকে ‘ফার্ম ম্যাট্রেস’ বলা হয়। কারণ, খুব নরম ও খুব শক্ত—দুই ধরনের বিছানাই আমাদের মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বক্রতা নষ্ট করে দেয়।

  • মেরুদণ্ডের কোমরের অংশকে মেডিকেল পরিভাষায় ‘লাম্বোসেকরাল স্পাইন’ বলা হয়। জন্মগতভাবে আমাদের মেরুদণ্ডের কোমরের অংশে একটি বক্রতা থাকে, যাকে বলা হয় ‘লাম্বার কার্ভাচার’। যখন শোবার বিছানা খুব নরম হয়, তখন এই কার্ভাচার বা বক্রতা অতিরিক্ত সোজা হয়ে যায়, একে বলে ‘লাম্বার কার্ভাচার স্ট্রেইট্রেনিং’। কখনো কখনো ডান অথবা বাঁ পার্শ্বে বাঁকা হয়ে যায়, যেটাকে মেডিকেল ভাষায় ‘স্কোলিওসিস’ বলা হয়।

  • বিছানার উচ্চতা: বিছানার উচ্চতা হওয়া উচিত ব্যক্তির হাঁটুর উচ্চতার সমপরিমাণ। এর থেকে বেশি উঁচু কিংবা নিচু হলে ওঠানামার সময় কোমরব্যথা বেড়ে যেতে পারে।

  • বিছানা সমান বা সমতল হতে হবে, যেন আকাঁবাকাঁ কিংবা উঁচু-নিচু না হয়। দীর্ঘদিনের পুরোনো বিছানা বা তোশক পরিত্যাগ করতে হবে। কারণ, এগুলো অতটা সমতল থাকে না।

  • শোয়া থেকে ওঠার সময় এক পাশ কাত হয়ে উঠতে হবে, অন্যথায় কোমরব্যথা বেড়ে যেতে পারে।

  • কোমরব্যথা দীর্ঘমেয়াদি হলে অবহেলা না করে ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে চলতে পারলে ভালো।

  • আর দৈনন্দিন কার্যকলাপেও চাই সাবধানতা।

আগামীকাল পড়ুন

কীভাবে খাবারে আয়োডিন রক্ষা করবেন