বিষণ্ণতা ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবে এই সাত অভ্যাস

দীর্ঘদিন বিষণ্নতা আর দুশ্চিন্তার সঙ্গে লড়াই করেছেন কোলবি কাল্টজেন। এখন নিজেই তিনি ইনস্টাগ্রামে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে নানা পরামর্শ দেন। কোলবি জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে নানা মানসিক সংকটে ভুগেছেন তিনি। ব্রেন ফগ বা মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে কাজ না করা, মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা, কাজের ‘ফোকাস’ হারিয়ে ফেলা—এ রকম নানা সমস্যায় ভুগেছেন। এই সাত অভ্যাস তাঁকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সাহায্য করেছে। কোলবি যেভাবে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন, তাঁর বয়ানে সেভাবেই উল্লেখ করা হলো।

অন্যের ভালোমন্দের সঙ্গে নিজেকে জুড়ে ফেললে নিজের হতাশা, বিষণ্নতা চেপে ধরার সুযোগ পায় না
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

১. দীর্ঘ আট বছর ধরে আমি ধ্যান করেছি। ধ্যান চাপ কমায়, মনে প্রশান্তি আনে আর মানসিকভাবে সচেতন করে।


২. নিজেকে সৃজনশীল কাজে যুক্ত রাখার কোনো বিকল্প নেই। নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। যখন আপনি কেবল ‘কনজিউম’ করতে থাকেন, তখনই দুশ্চিন্তা জড়ো হতে থাকে। যখন আপনি কিছু তৈরি করেন, তখন দুশ্চিন্তা আপনাকে ছেড়ে যায়।


৩. মাঝে মাঝে সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেকে নিজের সঙ্গে জুড়ুন। সপ্তাহে অন্তত একবার বা দুবার এমন কিছু সময় রাখুন, যে সময়ে আপনি কিছুই দেখবেন না, শুনবেন না, পড়বেন না, কেবল ভাববেন। নিজেকে মাঝেমধ্যে এভাবে ‘বিযুক্ত’ করলে যেকোনো কিছু অল্প সময়ে অনুধাবন করা সহজ হয়।

৪. ব্যায়াম করুন। আশপাশের পার্কে কোনো একটা গ্রুপে যোগ দিন। সকালের স্বাস্থ্যকর হাওয়া খাওয়ার পাশাপাশি অন্যদের সঙ্গে সামাজিকীকরণটাও হবে। মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকা খুবই জরুরি। যখনই আপনার বিষণ্ন লাগবে, কোনো একজন কাছের মানুষের সঙ্গে গল্প করুন। দেখবেন, অনেকটাই হালকা লাগছে। অন্যের ভালোমন্দের সঙ্গে মিলেমিশে থাকলে নিজের হতাশা, বিষণ্নতা চেপে ধরার সুযোগ পায় না। তা ছাড়া, শারীরিক পরিশ্রম করলে হ্যাপি হরমোন নিঃসৃত হয়। ফলে বিষণ্নতা উবে যায়।

৫. প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান। একই সময়ে উঠুন। বিছানায় ফোন নিয়ে যাবেন না। সন্ধ্যের পর কোনো ক্যাফেইন নেবেন না। বেডরুম যেন ঠান্ডা আর অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়। ঘুমানোর তিন ঘণ্টার ভেতর কোনো ভারী খাবার খাবেন না।

৬. আপনাকে অবশ্যই মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আমাদের নিজেদের মাথার ভেতরকার দুশ্চিন্তা আমাদের বাস্তবতা থেকে বেশি কষ্ট দেয়। তাই অন্যের সঙ্গে আপনার সমস্যা নিয়ে কথা বললে সেটা আমাদের একটা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেয়। তবে অবশ্যই সেই মানুষটা সে রকম নির্ভরশীল হতে হবে। আমার ক্ষেত্রে সেই মানুষটা ছিল থেরাপিস্ট। আপনার ক্ষেত্রে পরিবারের কোনো সদস্য বা বন্ধু অথবা যে কেউ হতে পারে। যাকে আপনি ভরসা করতে পারেন।


৭. প্রতিদিন নেতিবাচক হাজারো চিন্তা আপনার মাথায় উঁকি দেবে। আপনাকে সেগুলো ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে। নেতিবাচকতাকে মাথার ভেতর বাসা বাঁধতে দেবেন না। এক দিনে এটা হবে না। ওপরের ছয়টা বিষয় আপনি যদি মেনে চলেন, তাহলে নেতিবাচকতাকে দূর করার মতো মানসিক অবস্থায় আপনি পৌঁছে যাবেন। তবে কোনোকিছু থেকেই তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ফলাফল আশা করবেন না। দুর্ঘটনা হুট করে ঘটে! অপর দিকে, ভালো কিছু ঘটতে সময় লাগে।