ইআরসিপি কেন করা হয়

ইআরসিপির মাধ্যমে পিত্তনালি ও অগ্ন্যাশয়ের নালির নানা রোগ নির্ণয় করা যায়
ছবি: সংগৃহীত

এন্ডোস্কপিক রেট্রোগ্রেড কোলাঞ্জিও-প্যানক্রিয়াটোগ্রাফি বা ইআরসিপি এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে পিত্তনালি ও অগ্ন্যাশয়ের নালির নানা রোগ নির্ণয় করা যায়। আবার একই সঙ্গে এসব অংশের বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসাও করা যায়। সাধারণত পিত্তনালি ও অগ্ন্যাশয়ের নালির কোনো অংশে বাধা (ব্লক) থাকলে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। মুখের মধ্য দিয়ে নল ঢুকিয়ে যেভাবে এন্ডোস্কপি করা হয়, এটিও তা–ই। মূলত এন্ডোস্কপি যন্ত্রের মাধ্যমেই আরেকটু উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় করা হয় ইআরসিপি। এ সময় রোগীকে ঘুমের ওষুধ দিয়ে অচেতন রাখা হয়। তাই প্রক্রিয়াটি চলাকালে রোগী ব্যথা বোধ করেন না।

চিকিৎসায় প্রযুক্তির সুফল

পিত্তথলির পাথর পিত্তনালিতে এসে আটকে যেতে পারে। ল্যাপারোস্কপিক শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে সহজেই পিত্তথলি অপসারণ করা গেলেও পিত্তনালির পাথর সরানো সম্ভব নয়। এই পাথর অপসারণ করতে প্রয়োজন ইআরসিপি। অগ্ন্যাশয়ের নালিতে পাথর আটকে থাকলে সেটির অপসারণও ইআরসিপি দিয়েই সম্ভব। পিত্তনালি বা অগ্ন্যাশয়ের নালিতে যদি এমন কোনো বাধা থাকে, যা এভাবে সরানো সম্ভব নয়, তাহলে সেখানে ‘স্টেন্ট’ বসিয়ে দেওয়ারও সুযোগ থাকে। স্টেন্ট বসিয়ে দিলে নালিপথের মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক গতিশীলতা ফিরে আসে।

জটিলতা হতে পারে?

মুখ দিয়ে এন্ডোস্কোপের নল ঢোকানোর কারণে জ্ঞান ফেরার পর রোগী গলায় কিছুটা ব্যথা বোধ করতে পারেন। এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। এই ব্যথা সহজেই সেরে যায়। ইআরসিপি বেশ নিরাপদ প্রক্রিয়া। ইআরসিপি-সংক্রান্ত জটিলতার হার কম। অল্প কিছু ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে। এসব জটিলতার মধ্যে রয়েছে অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ, পিত্তনালি বা অগ্ন্যাশয়ের নালিতে ছিদ্র সৃষ্টি, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ। ঘুমের ওষুধের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে।

ভয় নয়, চাই সচেতনতা

চিকিৎসক যদি ইআরসিপির পরামর্শ দেন, তাহলে জটিলতার ভয়ে পিছিয়ে আসা উচিত নয়। যাঁদের ইআরসিপি করার পর কোনো জটিলতা দেখা দেয়, তাঁরাও দ্রুত হাসপাতালে চলে এলে জটিলতা নিরসন করার সুযোগ থাকে।

কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন

  • আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদি কোনো রোগে ভুগে থাকেন (যেমন ডায়াবেটিস, ফুসফুসের রোগ প্রভৃতি), তাহলে চিকিৎসককে আগেই জানিয়ে রাখুন। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

  • নিয়মিত কোনো ওষুধ সেবন করলে সেটিও আগে জানিয়ে রাখুন।

  • ইআরসিপি করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বমিভাব, বমি (বা মুখ দিয়ে রক্তপাত), পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাওয়া, জ্বর, বুকে ব্যথা, প্রচণ্ড পেটব্যথা কিংবা একনাগাড়ে কাশি হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে দেরি করবেন না।