গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে খাদ্যসচেতনতা

জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) একটি জরিপে দেখা গেছে, দেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ। এঁদের মধ্যে ১৮-৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ২৬ লাখ, অন্যরা ৩৫ বছরের বেশি বয়সী।

বাংলাদেশে মূলত যে পাঁচ কারণে গর্ভাবস্থায় ও সন্তান প্রসবের সময় নারীরা মারা যান, তার অন্যতম হলো ডায়াবেটিস।

ডায়াবেটিস একটি অসংক্রামক রোগ। একবার হলে সারা জীবন থাকে, ভালো হয়ে যায় না। তবে গর্ভাবস্থায় যে ডায়াবেটিস পাওয়া যায়, তাকে জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বলে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর এই ডায়াবেটিস ভালো হয়ে যায়। তবে রোগী যদি অসচেতন হয়ে নিয়ম না মানেন, আবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সচেতনতার বিকল্প নেই। গর্ভাবস্থায় যদি নিয়মিত চেকআপে ডায়াবেটিস পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে—

  • অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

  • চিকিৎসকের পরামর্শমতো ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হবে।

  • অবশ্যই অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শে খাদ্যব্যবস্থা মানতে হবে।

  • সন্তানের জন্ম বা ডেলিভারি অবশ্যই হাসপাতালে করাতে হবে।        

যেসব ভ্রান্ত ধারণা এড়িয়ে চলতে হবে

  • এটা খাওয়া যাবে না, ওটা খেলে সন্তানের সমস্যা হবে—এ ধরনের ভুল তথ্যে কান দেওয়া যাবে না।

  • টানা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকা যাবে না।

  • একবারে বেশি করে খাওয়া যাবে না।

  • প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, মিনারেল ও পানি পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে খেতে হবে।

  • দিনের খাবার ৫-৬ বেলায় ভাগ করে খেতে হবে।

প্রসব–পরবর্তী সচেতনতা

  • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চেকআপ করা জরুরি।

  • সন্তানকে ছয় মাস পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এ সময় এক ফোঁটা পানিরও প্রয়োজন নেই।

  • সন্তান জন্মের পরপরই মায়ের হলুদ রঙের আঠালো যে দুধ (কলোস্ট্রাম বা শালদুধ) বের হয়, তা অবশ্যই শিশুকে খাওয়াতে হবে। এটি শিশুর প্রথম ভ্যাকসিন হিসেবে খ্যাত।

হাসিনা আকতার, ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট ও কনসালট্যান্ট, ল্যাবএইড হসপিটাল লিমিটেড