সাকিব-তামিম হাতে আঘাত নিয়েও ব্যাট করেছেন, এমন আঘাতে আপনি কী করবেন

হঠাৎ হাতে আঘাত লাগতে পারে যে কারোরই
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চিড় ধরা আঙুল নিয়েও ব্যাট করেছেন সাকিব আল হাসান। ২০১৮ সালে এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কারই বিপক্ষে এক ম্যাচে হাতে আঘাত পাওয়ার পর এক হাতে তামিম ইকবালের ব্যাট করার ছবিটা বোধ হয় ক্রিকেটপ্রেমীরা কোনো দিনই ভুলতে পারবেন না। সেবার তামিমের হাতের আঙুল আর কবজিতে চিড় ধরেছিল। দেশের জন্য, দলের জন্য প্রিয় ক্রিকেটারদের এমন লড়াকু মনোভাবকে স্যালুট জানাতেই হয়। তবে বিশেষজ্ঞ মতামত হলো, এমন আঘাত নিয়ে খেলা চালিয়ে যাওয়াটা ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ।

রোজকার জীবনে হঠাৎ হাতে আঘাত লাগতে পারে যে কারোরই। আঙুল, নখ, তালু, কবজি বা যেকোনো জয়েন্ট বা জোড়ায় আঘাত লাগতে পারে। কোনো ক্ষেত্রে হাড় ভেঙে যায়, হাড়ে চিড় ধরে, আবার কোনো ক্ষেত্রে কেবল পেশি, লিগামেন্ট বা হাতের ত্বকের নিচের নরম অংশটায় চোট লাগে। আঘাত লাগলে আপনি কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় না-ও বুঝতে পারেন, ভেতরের ঠিক কোন অংশটার ক্ষতি হয়েছে। তাই হাতের কোনো অংশে জোরেশোরে আঘাত লাগলে হাতে বরফ দিয়ে চেপে ধরাই হবে প্রথম কাজ। ওই হাত দিয়ে কোনো কাজ না করে বরং খানিকটা বিরতি নিন। ব্যথা খুব বেশি হলে অবশ্যই স্প্লিন্ট–জাতীয় কোনো কিছুর ব্যবস্থা করতে হবে। হাতের কাছে যা পাওয়া যাবে, তা দিয়েই তৈরি করে নিতে হবে স্প্লিন্ট। এ ছাড়া আক্রান্ত স্থান উঁচু করে রাখারও প্রয়োজন পড়ে। এমনটাই বলছিলেন জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের অর্থোপেডিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ রুহুল আমিন মোল্যা।

বরফ দেওয়ার নিয়ম

বরফ সরাসরি প্রয়োগ করতে নেই। কাপড় বা পাতলা তোয়ালে দিয়ে বরফটাকে মুড়িয়ে নিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে চেপে ধরে রাখতে হবে টানা ৫-১০ মিনিট। আর যদি আইসপ্যাক পেয়ে যান, তা অবশ্য সরাসরিই প্রয়োগ করতে পারেন এ সময়।

ব্যথা কমাতে

ব্যথানাশক স্প্রে, জেল বা অয়েনমেন্ট যেটিই পাবেন হাতের কাছে, সেটিই কাজে লাগান। তবে আহত স্থানে এসব কোনো কিছুই ঘষা যাবে না। কেবল হালকাভাবে প্রয়োগ করতে হবে।

কখন প্রয়োজন স্প্লিন্ট? কীভাবে তৈরি করবেন?

প্রচণ্ড ব্যথা হলে আপনার প্রয়োজন হবে স্পিন্টের, যা আপনার আঘাতকে আরও জটিল হয়ে পড়া থেকে বাঁচাবে। ব্যথাও কিছুটা কম অনুভব করবেন আপনি। আঙুল ও কবজির জন্য আলাদা স্প্লিন্ট কিনতে পাওয়া যায়। তবে এমন কোনো দোকান সেই মুহূর্তে আপনি না-ও খুঁজে পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে হাতের কাছে যা পাবেন, সেটিই কাজে লাগান। এই যেমন আইসক্রিমের কাঠির মতো ছোটখাটো কিছু আক্রান্ত স্থানের সঙ্গে হালকাভাবে বেঁধে রাখলেই প্রাথমিকভাবে স্প্লিন্টের কাজ হয়ে যাবে।

আঘাত লাগলে আপনি কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় না-ও বুঝতে পারেন, ভেতরের ঠিক কোন অংশটার ক্ষতি হয়েছে। তাই হাতের কোনো অংশে জোরেশোরে আঘাত লাগলে হাতে বরফ দিয়ে চেপে ধরাই হবে প্রথম কাজ

যদি কেটে যায়, ফেটে যায়

রক্তপাত বন্ধ করার জন্য আক্রান্ত স্থান চাপ দিয়ে ধরুন। আক্রান্ত স্থানটিকে হৃৎপিণ্ডের অবস্থানের চেয়ে একটু ওপরে উঠিয়ে রাখলে রক্তের প্রবাহ কমে আসে। পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে জীবাণুনাশক দ্রবণ (পভিডোন আয়োডিন) দিয়ে মুছে ফেলুন আক্রান্ত স্থান। এরপর জীবাণুমুক্ত (স্টেরাইল) গজ দিয়ে পেঁচিয়ে নিতে পারলে ভালো। তা না পেলে পরিষ্কার, নরম, সুতি কাপড় ব্যবহার করুন।

আরও যা

  • প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সেই অনুযায়ী এক্স-রে এবং অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান। নির্দেশনামাফিক বিশ্রামও নিন।

  • কাটাছেঁড়ায় টিটেনাস টিকা নেওয়ারও প্রয়োজন হতে পারে।