কোন কোন ফলে পটাশিয়াম বেশি, এসব ফল কতটুকু খাওয়া উচিত
ভিটামিন ও খনিজের চমৎকার উৎস ফল। চিকিৎসকেরা প্রতিদিন তাজা ফল ও শাকসবজি খেতে পরামর্শ দেন। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এই পরামর্শ খাটে না। যাঁদের জন্য বেশি পটাশিয়াম গ্রহণ ক্ষতিকর, তাঁদের ফল খেতে বরং সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
পটাশিয়াম আমাদের শরীরের খুবই গুরুত্বপূর্ণ লবণ। আমাদের শরীরের বিভিন্ন বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে পটাশিয়াম প্রয়োজন। মাংসপেশির সঠিক সঞ্চালনে পটাশিয়াম রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। হৃৎস্পন্দনের জন্যও পর্যাপ্ত পটাশিয়াম দরকার। উপাদানটি কম বা বেশি হলে, দুই ক্ষেত্রেই হৃৎস্পন্দনে সমস্যা হতে পারে।
ফলে কেন পটাশিয়াম বেশি থাকে
গাছের বেড়ে ওঠার জন্য পটাশিয়াম জরুরি। এটি গাছের পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং ফল পাকতে সহায়তা করে। ফলের ভেতর পানি ও মিষ্টতা ধরে রাখে। এ কারণে ফল যত বড় হতে থাকে, পাকতে থাকে, এর মধ্যে পটাশিয়ামের পরিমাণও বাড়তে থাকে।
পটাশিয়ামসমৃদ্ধ ফল
প্রতিদিন খাওয়া হয়, এমন ফলের মধ্যে কলায় সবচেয়ে বেশি পটাশিয়াম থাকে। এ ছাড়া ডাবের পানিতেও পটাশিয়ামের উপস্থিতি বেশি। এ কারণে যেসব সমস্যায় পটাশিয়াম কমে যায় (ডায়রিয়া বা বমি হলে), সেসব ক্ষেত্রে এসব ফল বেশি করে খেতে বলা হয়। এর পাশাপাশি আঙুর, বেদানা, আমে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে।
আমাদের দেশে পাওয়া যায়, এমন বিদেশি ফলের মধ্যে কিউই, অ্যাভোকাডো পটাশিয়ামসমৃদ্ধ ফল। শুকনা খেজুর, কিশমিশেও পটাশিয়াম ভালো পরিমাণে থাকে।
পটাশিয়াম যুক্ত ফল কতটা খাওয়া উচিত
একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের অবশ্যই সব ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। অনেকে মনে করেন, পটাশিয়ামসমৃদ্ধ ফল খেলে রক্তে পটাশিয়াম বেড়ে খারাপ প্রভাব ফেলবে। আদতে সুস্থ ব্যক্তির খেতে নিষেধ নেই। সুস্থ–স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পটাশিয়াম শরীরে শোষিত হয়ে অতিরিক্ত পটাশিয়াম কিডনি দিয়ে নিষ্কাশন হয়ে যায়। সুতরাং একজন সুস্থ–স্বাভাবিক মানুষ পটাশিয়ামসমৃদ্ধ ফল খেতে পারেন।
তবে যাঁদের কিডনি রোগ আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এ নিয়ম মোটেও প্রযোজ্য নয়। কিডনি রোগীর শরীর থেকে অতিরিক্ত পটাশিয়াম নিষ্কাশিত হয় না, এতে পটাশিয়াম জমে শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে যেসব ফল ও খাবারে পটাশিয়াম বেশি, সেসব পরিমিত বা না খাওয়াই ভালো। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে চলতে হবে। চিকিৎসকই বলে দেবেন, কোন ফল খাওয়া যাবে আর কোনটা যাবে না।