নিয়মিত ওটস খেলে এই সাত ব্যাপার ঘটবে

পুষ্টিবিদেরা ওটসকে প্রথম শ্রেণির সকালের নাশতার মর্যাদা দিয়েছেন। এটাই নাকি বিশ্বের সবচেয়ে পুষ্টিকর শস্য। ওটসের একটা ডিব্বা নিয়ে আপনি নানা কিছু করতে পারেন। রাতে সিনেমা দেখতে দেখতে শুকনা সেগুলো চিবাতে পারেন। দুধে নানা রকমের তাজা ও শুকনা ফল আর মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। পিঠার মতো করে সেঁকেও খেতে পারেন। আবার ব্লেন্ড করে বাটার মিশিয়েও খেয়ে ফেলতে পারেন। ওটস দিয়ে বানানো যায় স্বাস্থ্যসম্মত কেক, বিস্কুট, রুটি, স্মুদি, স্যুপ, ফ্রাইড রাইস, খিচুড়িসহ অনেক কিছু। নিয়মিত ওটমিল খেলে কী হয়, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
কলা, স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, খেজুর, কিসমিস এগুলো দিয়ে দুধে ভিজিয়ে খেতে পারেন ওটস
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

১. দীর্ঘক্ষণ খিদে লাগবে না

ওটস ফাইবারের খুব ভালো উৎস। এই কার্বোহাইড্রেট হজম করতে সময় লাগে। ফলে লম্বা সময় ধরে খিদে পায় না। তাই আপনার যদি ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকে, ওটমিল আপনার জন্য সেরা। এক কাপ রান্না করা ওটমিলে চার গ্রাম ফাইবার থাকে। এটা দৈনিক চাহিদার শতকরা ১৬ ভাগ।

২. টয়লেটে সময়টা ভালো কাটবে

ওটমিল বেটা-গ্লুকোন নামের ফাইবারসমৃদ্ধ, তাই সকালের নাশতা আপনার টয়লেটের অভিজ্ঞতাকে অনেকখানি সহজ করবে। আর ওটমিলের সঙ্গে আপনি যদি আপেল, কলা, খেজুর, ব্ল্যাকবেরি বা মিশ্র বাদাম খান, তাহলে তো কথাই নেই।

ওটমিল বেটা-গ্লুকোন নামের ফাইবারসমৃদ্ধ
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

৩. হার্টের অসুখের ঝুঁকি কমবে

ওটমিল খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এমনকি উচ্চ রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণ করে। এসব কার্যক্রম হৃৎপিণ্ড স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। সব ধরনের কার্ডিওভাস্কুলার অসুখের ঝুঁকি কমায়।

৪. মন ভালো রাখে

ওটস মস্তিষ্কে সেরোটোনিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। সেরোটোনিন ঘুম ও রাগ নিয়ন্ত্রণ করে। এটি দুশ্চিন্তা দূর করে মন ভালো রাখতেও বেশ সহায়ক।

মন ভালো রাখে ওটস
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে

২০২১ সালে জার্নাল অব নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটা নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘ওটসের ফাইবার পাকস্থলীকে দীর্ঘক্ষণ সন্তুষ্ট রাখবে। আবার সারা দিন শর্করাজাতীয় খাবার গ্রহণ করার প্রবণতাও কমাবে। ক্যালরি কম গ্রহণ করলে ওজন কমানোও সহজ হবে। এ ছাড়া বেটা-গ্লুকোনের প্রভাবে পাকস্থলীতে পেপটাইড ওয়াইওয়াই নামের একটি হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন আপনাকে মানসিকভাবে তৃপ্ত রাখে আর খাবার গ্রহণের প্রবণতা কমায়। হাইপারগ্লাসেমিয়া (রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যাওয়া) নিয়ন্ত্রণেও বেটা-গ্লুকোন ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।’

ওটস উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পুষ্টিদাতা
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

৬. উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পুষ্টিদাতা

ওটমিল প্রিবায়েটিক খাবার। এর মানে হলো, এটা আপনার অন্ত্রে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্টি দেয়। এর ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে। মনমেজাজ ফুরফুরে থাকে, আর হজমও ভালো হয়।

৭. স্তন ও কোলন ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর

ওটসের বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট স্তন ও কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী প্রতিদিন এক বাটি ওটস খান, তাঁদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি ৪১ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়। পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র ও বৃহদান্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ওটস। এসব অঙ্গ সুস্থ থাকলে কোলন ক্যানসার হওয়ার কোনো আশঙ্কাই থাকে না।