বেড়াতে গেলেই কোষ্টকাঠিন্য? কেন এমন হয়
দিনের একটা বড় সময় যদি কাটাতে হয় পেটের অস্বস্তি নিয়েই, তাহলে দিনটা উপভোগ করা কঠিন। ধরুন, কোথাও বেড়াতে গিয়ে সকাল থেকে সেখানকার দর্শনীয় স্থানগুলোতে একে একে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন আপনি। কিন্তু সকালবেলা বাথরুমেই কেটে গেল লম্বা সময়। এমন পরিস্থিতি বেশ মুশকিলের বটে। কেউ কেউ প্রায়ই কোষ্টকাঠিন্যে ভোগেন। কারও আবার বেড়াতে গেলেই পেটের কী যেন হয়! এর কারণ কী? সমাধানই–বা কী?
সিলেট ইবনে সিনা হাসপাতালের কনসালট্যান্ট সার্জন ডা. রেজা আহমদ বলেন, ‘বেড়াতে গিয়ে অনেকেই পানি কম খান। আবার স্বস্তিদায়ক পরিবেশ না পাওয়ায় মলত্যাগের চাপ অনুভব করলেও অনেকে তা আটকে রাখেন।
এসব কারণে মল শক্ত হতে থাকে। তা ছাড়া যানবাহনে ভ্রমণের উদ্বেগে ভোগার কারণেও কারও কারও কোষ্টকাঠিন্য হয়। কোষ্টকাঠিন্য যে কেবল সাময়িক অস্বস্তিরই কারণ, তা নয়। বরং কোষ্টকাঠিন্যের কারণে মলদ্বার চিরে যাওয়া এবং পাইলসের মতো কষ্টদায়ক রোগের ঝুঁকিও বাড়ে।’
বেড়াতে গিয়ে কোষ্টকাঠিন্য এড়ানোর উপায় সম্পর্কে জানালেন এই বিশেষজ্ঞ।
তরল গ্রহণ ঠিকঠাক
অনেক স্থানেই মানসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থা থাকে না। তাই ঘোরাঘুরির সময় প্রস্রাবের পরিমাণ কমাতে পানি ও অন্যান্য তরল খাবার কম খান অনেকেই। এতে প্রস্রাবে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে, কোষ্টকাঠিন্যও হয়। পানির অভাবে দেহ হারায় সতেজতা। এমন সব সমস্যা এড়াতে পানি কিংবা তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে পর্যাপ্ত।
খাবারদাবার যেমন চাই
ভ্রমণে গিয়ে শাকসবজি বা ফলমূলের মতো আঁশসমৃদ্ধ খাবার অনেক সময় কম খাওয়া হয়। বরং ঝটপট খেয়ে নেওয়া হয় ফাস্টফুড বা রেস্তোরাঁর মুখরোচক খাবার। কিন্তু কোষ্টকাঠিন্য এড়াতে হলে ফাস্টফুড একটু কম খাওয়াই ভালো।
বরং ভ্রমণের সময়টায় স্ন্যাকস হিসেবে কলা, আপেল, পেয়ারার মতো কিছু ফলমূলের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। যেসব ফল খোসাসহ খাওয়া যায়, সেগুলোর খোসা খাওয়াও ভালো। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে।
প্রয়োজন আরও যা
বেড়াতে গিয়ে ঘুমানো বা ঘুম থেকে ওঠার বিষয়ে খুব বেশি অনিয়ম না করাই ভালো।
একটানা শুয়ে বা বসে সময় কাটানোও ঠিক নয়। বরং এমনভাবে ঘোরাফেরা করা উচিত, যেন শরীরটা একটু নড়াচড়ার অবকাশ পায়।
ধরা যাক, আপনি সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে গেছেন। সেখানে আয়েশ করে বসে থাকার সুযোগ মিললেও একটানা বসবেন না। এদিক–ওদিক হাঁটাহাঁটি করুন। দেহের নড়াচড়া না হলে কোষ্টকাঠিন্য হতেই পারে।
প্রস্রাব কিংবা মলত্যাগের চাপ এলে তা আটকে রাখা উচিত নয়। পরিবেশ স্বস্তিদায়ক না হলেও সাময়িক ব্যাপার হিসেবে বিষয়টিকে মেনে নিতে চেষ্টা করুন।
ইসবগুলের ভুসি সঙ্গে রাখতে পারেন। সম্ভব হলে কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে নিন এই ভুসি। তবে ভুসি কখনো ভিজিয়ে রেখে দিতে নেই। পানিতে মিশিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই খেয়ে নেওয়া উচিত।