যে কারণে মুখ ফুলে যেতে পারে

চেহারায় ভারী ভাব অনেকের কাছে ভালো লাগতে পারে। তবে হঠাৎ মুখ ফুলে যাওয়ার পেছনে যেমন খুব স্বাভাবিক কারণ থাকতে পারে, আবার কিছু মারাত্মক জটিলতাও থাকতে পারে।

সাধারণ ক্ষেত্রে ঘুম থেকে ওঠার পর চোখমুখে ফোলা ভাব থাকতেই পারে। খুব কম ঘুমালে যেমন চোখমুখে ফোলা ভাব হয়, বেশি ঘুমালেও এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। কারও যদি ওজন বাড়ে, তাহলে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মুখেও ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে। কোনো কোনো সময় অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় মুখ ফুলতে পারে, সঙ্গে লালচে ভাব বা চুলকানিও থাকতে পারে। খাওয়াদাওয়া থেকে অ্যালার্জিজনিত সমস্যাও হতে পারে। কারও আবার ওষুধ বা সূর্যের আলো থেকেও হতে পারে।

ঘুম থেকে ওঠার পর চোখমুখে ফোলা ভাব থাকতেই পারে
ছবি: পেক্সেল

ভাইরাসজনিত রোগ, যেমন মাম্পস হলেও মুখের নিচে দুই পাশে ফোলা ভাব দেখা যায়। কিছু ওষুধ খেলেও মুখে পানি এসে মুখ ফুলতে পারে, যেমন কিছু ব্যথানাশক, স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ ইত্যাদি। তাই হুট করে মুখ ফোলার সমস্যা হলে ওষুধ খাওয়ার ইতিহাস পর্যালোচনা করা বেশ জরুরি।

কিছু বিশেষ রোগব্যাধিতে মুখ ফোলার সমস্যা হতে পারে। এর ভেতর কিডনির সমস্যা একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ। কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে মুখে, বিশেষ করে চোখের তলায় ফোলা ভাব দেখা যায়। সঙ্গে অবশ্য প্রস্রাবের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি জটিলতাও থাকতে পারে।

থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি হলে ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মুখেও ফোলা ভাব দেখা যায়। অবশ্য এর সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য, শীত শীত ভাব, ক্লান্তি—এসব উপসর্গও থাকে। আবার হৃদ্‌যন্ত্রের নানা সমস্যায় চোখমুখ ফুলতে পারে, সঙ্গে পেটে ও পায়েও পানি আসে, থাকতে পারে শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা।

থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি হলে মুখে ফোলা ভাব দেখা যায়
ছবি: পেক্সেল

কিছু কিছু বিরল কারণেও মুখে ফোলা ভাব দেখা যায়। এনজিও এডেমা নামক সমস্যায় একেবারে হঠাৎ করেই পুরো মুখ বেশ ফুলে যায়। মুখের চামড়ায় ইনফেকশন হলে, সাইনাস বা দাঁতের মাড়ির প্রদাহ হলে, আঘাতজনিত সমস্যায়, মদজাতীয় পানীয় আসক্তিতে মুখে ফোলা ভাব দেখা দিতে পারে।

মোদ্দাকথা হচ্ছে, অনেক কারণেই ফুলতে পারে মুখ। কিন্তু সব সময় হালকা কারণ ভেবে এই সমস্যাকে এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। বিশেষ করে যাদের কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা হৃদ্‌রোগ রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে কারণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

ডা. শাহনূর শারমিন, সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ