স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি যেভাবে বুঝবেন

বিশ্বে অক্টোবরকে স্তন ক্যানসার সচেতনতার মাস হিসেবে পালন করা হয়। স্তন ক্যানসার নারীদের অন্যতম প্রধান ক্যানসার। প্রত্যেক নারীর এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা রাখা উচিত। স্তন ক্যানসার সম্পর্কে কিছু প্রচলিত ধারণা আছে। জেনে নেওয়া যাক এসব কারণ—

  • অনেকেই মনে করেন, স্তন ক্যানসার শুধু মায়ের দিকের আত্মীয় থেকে পারিবারিকভাবে পেতে পারেন। বাবার দিকের আত্মীয় থেকে নয়। বিষয়টি সঠিক নয়। বাবার দিকের আত্মীয় থেকেও এই রোগের ঝুঁকি আছে।

  • ছেলেদের স্তন ক্যানসার হয় না, এটিও ভুল ধারণা। ১ শতাংশ ছেলেদের ক্ষেত্রে স্তন ক্যানসার হতে পারে। যদি কোনো পরিবারে কোনো ছেলে সদস্যের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস থাকে, তবে সেই পরিবারের মেয়েরাও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিতে থাকেন। ধারণা করা হয়, ছেলেদের স্তন ক্যানসারে জিনগত ত্রুটি থাকে, যা জিনের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের বাকিদের কাছেও যেতে পারে।

  • কেবল স্তন ক্যানসার নয়, পারিবারিকভাবে ওভারি বা ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাসও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এ দুটি ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার জিনগত ত্রুটি একই কারণে হতে পারে। এগুলোকে বলে বিআরসিএ১ ও বিআরসিএ২।

  • এ ছাড়া পরিবারের কোনো সদস্য কম বয়সে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হলে, কোনো সদস্যের দুই স্তনেই ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে এবং কোনো নারীর নিজের এক স্তনের ক্যানসারে আক্রান্ত হলে তাঁর অন্য স্তনের ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কাজেই পারিবারিক ইতিহাস জানুন এবং একে গুরুত্ব দিন।

  • সাধারণত আমাদের দেশে মাসিক বন্ধ হওয়ার আগেই ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস বেশি। যদিও পশ্চিমা বিশ্বে আক্রান্ত হওয়ার হার মাসিক বন্ধ হওয়ার পর বেশি। তবে অল্প বয়সে স্ক্রিনিংয়ের জন্য যে ম্যামোগ্রাম দরকার, সেটি করার আগে আপনি অন্তঃসত্ত্বা কি না, নিশ্চিত হতে হবে। চিকিৎসককে শেষ মাসিকের তারিখ জানিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন, কখন আপনার পরীক্ষা নিরাপদ।

  • গর্ভবতী নারীরাও স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই গর্ভবতী নারীদের এই সময়ে সচেতন থাকতে হবে। বিশেষত, গর্ভবতী অবস্থায় স্তনের আকার-আকৃতি অনেক পরিবর্তিত হয়, তাই এই সময়ে ক্যানসারে আক্রান্ত হলে তা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই সামান্য পরিবর্তন মনে হলে সঙ্গে সঙ্গেই আলট্রাসাউন্ড করা উচিত। সন্দেহজনক হলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো থ্রি–ডি ম্যামোগ্রাম করা যায়। শিল্ডিং করে করলে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেক কম।

  • অধ্যাপক ডা. লায়লা শিরিন, বিভাগীয় প্রধান, সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগ, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল