অস্টিওপোরোসিস নিয়ে সচেতনতা জরুরি

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিবেচনায় বিপজ্জনক রোগের তালিকায় দশম স্থানে অস্টিওপোরোসিস। কিন্তু অনেকে রোগটি সম্পর্কে অসচেতন। প্রতিবছর ২০ অক্টোবর বিশ্ব অস্টিওপোরোসিস দিবস হিসেবে পালিত হয়।

৪০ বছর বয়সের পর থেকে হাড়ের ভেতরের ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের পরিমাণ কমে যেতে থাকে। ঘনত্ব কমে গিয়ে হাড় ছিদ্রযুক্ত, দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। অস্টিওপোরোসিসে কোমরের হাড়, মেরুদণ্ড ও হাতের কবজির হাড় ভাঙার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। বিশ্বব্যাপী পঞ্চাশোর্ধ্ব প্রতি তিন নারীর একজন ও প্রতি পাঁচ পুরুষের একজন ক্ষয়জনিত হাড় ভাঙার সমস্যায় আক্রান্ত।

ঝুঁকি

বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে। এ ছাড়া কিছু কারণে কারও ক্ষেত্রে এ রোগের ঝুঁকি বেশি। সেগুলো হলো:

● বংশানুক্রমিক হাড়ক্ষয়ের প্রবণতা; কম ওজন;

● ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন;

● হরমোনজনিত রোগ, যেমন থাইরয়েড বা প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির জটিলতা, টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি, অল্পবয়সে মেনোপজ, কুশিং সিনড্রোম;

● অন্যান্য রোগ, যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রারাইটিস; অন্ত্রের রোগ, যেমন ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজ, সিলিয়াক ডিজিজ, দীর্ঘমেয়াদি কিডনি জটিলতা;

● দীর্ঘমেয়াদে স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ সেবন, প্রোস্টেট ও স্তন ক্যানসারে ব্যবহৃত ওষুধ;

● পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডির ঘাটতি;

● কায়িক শ্রমের অভাব।

শনাক্ত 

ডেক্সা বা বোন ডেনসিওমেট্রির মাধ্যমে হাড়ের ঘনত্ব দেখা হয়। এফআরএএক্স অ্যাপের সাহায্যে যেকেউ অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি নিরূপণ করতে পারেন। ঝুঁকি নির্ধারণে চিকিৎসক প্রয়োজনীয় অন্যান্য পরীক্ষা করতে পারেন।

প্রতিরোধ

● ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার যেমন দুধ, টক দই, পনির, বাদাম, সবুজ শাকসবজি, ছোট মাছ বেশি খেতে হবে। সুষম উৎস থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি নিশ্চিত করতে হবে। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডির পাশাপাশি পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে;

● নিয়মিত হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতারসহ শরীরচর্চার অভ্যাস করতে হবে। প্রতিদিন ১৫–২০ মিনিট গায়ে রোদ লাগান; শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

● সুষম উৎস থেকে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন নিতে না পারলে চিকিৎসকের পরামর্শে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে;

● চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকুন। ধূমপান ও অ্যালকোহল পানের অভ্যাস বর্জন করুন। 

করণীয়

● বাথরুমের মেঝে শুকনা রাখুন ও উজ্জ্বল আলোর ব্যবস্থা করুন;

● বয়স্ক ব্যক্তিরা হাঁটার সময় প্রয়োজনে লাঠি ব্যবহার করুন;

● সিঁড়ি দিয়ে ওঠা–নামার সময় রেলিং ধরুন;

● পিচ্ছিল, উঁচু-নিচু স্থান, ভাঙা রাস্তা পরিহার করুন।

আগামীকাল পড়ুন: পানি পান সম্পর্কে কিছু তথ্য