অন্যের ধূমপানে আপনার যেসব ক্ষতি হয়

বাড়িতে ধূমপান করলে বাড়ির সদস্যরাও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন

ধূমপানে বিষপান—সবারই জানা। তবু আজও বহু মানুষ ধূমপানের নেশায় ডুবে আছেন। নিজেদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা তাঁরা হয়তো ভাবেন না। কিন্তু অন্যদেরও মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলেন। দেশে ধূমপানসংক্রান্ত আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই। তাই গণপরিবহন বা জমায়েতের স্থানে হামেশাই চলে ধূমপান।

বাড়িতে ধূমপান করলে বাড়ির সদস্যরাও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন। ফ্যান-এসি চালিয়ে বা অন্য কোনো উপায়ে এই বাতাস বিশুদ্ধ করা যায় না। এমনকি বারান্দা কিংবা পৃথক ঘরে ধূমপান করলেও অন্যরা ঝুঁকিমুক্ত থাকেন না। সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকে চার হাজারের বেশি রাসায়নিক উপাদান, যার অন্তত ২৫০টিই ক্ষতিকর। পরোক্ষ ধূমপান কেবল স্বাস্থ্যগত বিষয়ই নয়, বরং এর সঙ্গে অন্যের ঝুঁকিও জড়িত বলে এটি নৈতিক এবং সামাজিক সমস্যা হিসেবেও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন

অধূমপায়ীর সমস্যাটা কি ‘সামান্য’?

অধূমপায়ী ব্যক্তির আশপাশে কেউ ধূমপান করলে এর কটু গন্ধে তাঁর অস্বস্তি শুরু হয়। মাথাব্যথা, কাশি কিংবা বমিভাবও হতে পারে, হতে পারে নাক সুড়সুড় করার মতো ‘ছোটখাটো’ সমস্যা আর সঙ্গে থাকতে পারে খানিকটা খারাপ লাগার অনুভূতি। এই প্রথম ধাক্কাটুকুই কেবল অনুভব করতে পারেন তিনি। বাকিটা নীরব ঘাতক। নীরবেই ক্ষতি হয়ে যায় দেহের অভ্যন্তর।

  • পরোক্ষ ধূমপানের ফলে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বাড়ে, রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাড়ে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা। ফলে একজন সুস্থ মানুষের স্ট্রোক এবং হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। আর যাঁরা আগ থেকেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত, পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হলে তাঁদের ঝুঁকি আরও বাড়ে।

  • পরোক্ষ ধূমপানে কেবল ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকিই যে বাড়ে, তা নয়; বরং সিগারেটের ধোঁয়ার নানা রাসায়নিক উপাদানের প্রভাবে অন্যান্য ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ে। ধোঁয়া মিলিয়ে যাওয়ার পরও ওই স্থানে দীর্ঘদিন পর্যন্ত এমন উপাদান রয়ে যায়, যা ক্যানসারের কারণ।

  • কিডনির রক্তনালিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে কিডনির কার্যক্ষমতার ওপর।

আরও পড়ুন
  • গর্ভবতী নারী পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হলে গর্ভের শিশুটি কম ওজন নিয়ে জন্মানোর ঝুঁকি থাকে, জন্মের পর যার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয়।

শিশুর ক্ষতি হচ্ছে কি?

শিশুদের ওপর পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাবটা মারাত্মক। শিশুর শ্বাসতন্ত্র সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাশি ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ (এমনকি নিউমোনিয়াও) হতে পারে। কানে সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে। ফুসফুসের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। জন্মের এক বছর বয়সের মধ্যে পরোক্ষ ধূমপানের কারণে সুস্থ শিশুর মৃত্যুও হতে পারে। পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাবে অ্যাজমা আক্রান্ত শিশুর বারবার মারাত্মক শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ার প্রবণতা