কোলন ক্যানসার প্রতিরোধে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন

বর্তমানে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ক্যানসারের এ ধরনের সঙ্গে রয়েছে খাদ্যাভ্যাসের একটি ওতপ্রোত সম্পর্ক। গবেষণা বলছে, কোলন ক্যানসারের জন্য দায়ী এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা আমরা খাবারের মাধ্যমে গ্রহণ করে থাকি।

কোলন ক্যানসারের এ ধরনের সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসের ওতপ্রোত সম্পর্ক রয়েছেছবি: ফ্রিপিক

কোন খাবার কীভাবে খাবেন

মাছ-মাংস উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নার সময় হেটেরোসাইক্লিক অ্যামাইনস ও পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন নামের যৌগ তৈরি হয়। বিশেষ করে গ্রিল, আগুনে ঝলসানো কাবাব বা উচ্চ তাপে কিছু ভাজার সময় এসব যৌগ বেশি তৈরি হয়। এসব যৌগ ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই মাছ-মাংস পুড়িয়ে, ঝলসিয়ে বা ফ্রাই করে না খেয়ে ঝোল করে রান্না করে খেতে হবে।

উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজা বা বেক করা খাবার যেমন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, ক্র্যাকার, চিপস ও তেলে ভাজা বিস্কুটে অ্যাক্রিলামাইড তৈরি হয়। যেসব খাবার দুইবারের বেশি ভাজা হয়, তাতে অ্যাক্রিলামাইড তৈরির হার বেশি। এমন খাবার নিয়মিত খেলে পরিপাকতন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।

প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন
ছবি: পেক্সেলস

‘স্টার্চি’ খাবার ১২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশি তাপে রান্না করা হলে অ্যাক্রিলামাইড তৈরি হতে পারে। শর্করা ও অ্যাসপারাজিন নামের অ্যামিনো অ্যাসিডের প্রতিক্রিয়ায় এটি হয়। শর্করাজাতীয় খাবার উচ্চ তাপমাত্রায় ভেজে খাওয়া বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়বার ভেজে খাবার খাওয়া যাবে না।

সসেজ, হ্যাম, বেকন, হটডগ ও প্রক্রিয়াজাত মাংসে নাইট্রেট ও নাইট্রাইটস নামের একধরনের রাসায়নিক প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয়। উচ্চ তাপে এটি নাইট্রোসামাইন গঠন করে, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই প্রক্রিয়াজাত খাবার (প্রসেসড ফুড) এড়িয়ে চলতে হবে।

বিভিন্ন রকমের কীটনাশকে অর্গানোফসফেট থাকে। বালাইনাশক হিসেবে ব্যবহারে এসব শাকসবজি ও ফলমূলে এটি থেকে যেতে পারে। ভালোভাবে পরিষ্কার না করে এসব খাবার খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই অতিরিক্ত বালাইনাশক প্রয়োগ করা হয়, এমন খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

বেশি অ্যালকোহল পান করলে শরীর তা প্রক্রিয়া করতে পারে না। এতে অ্যাসিটালডিহাইড তৈরি হয়, যা ডিএনএর ক্ষতি ও ক্যানসার সৃষ্টিকারী জিনকে সক্রিয় করে। প্রাকৃতিকভাবে খাবারে বিদ্যমান অ্যাসিটালডিহাইড শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। কিন্তু অ্যালকোহল পানের ফলে সৃষ্ট অতিরিক্ত অ্যাসিটালডিহাইড স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই অ্যালকোহল ও অ্যালকোহলসমৃদ্ধ পানীয় পান থেকে বিরত থাকতে হবে।

মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

আরও পড়ুন