শারীরিক নানা ক্ষেত্রে নারী পুরুষের চেয়ে এগিয়ে

নারীরা নাকি ভেনাস থেকে এসেছে, আর পুরুষেরা মঙ্গল গ্রহ! নারী–পুরুষকে নিয়ে এ রকম নানা মিথ প্রচলিত আছে। তবে এটা ঠিক যে নারী আর পুরুষের শরীর ও শরীরের ব্যবস্থাপনায় পার্থক্য আছে। যদিও পুরুষেরা গর্ব করে বলবেন যে তাঁরা নারীর চেয়ে শারীরিকভাবে শক্তিশালী, তবে শারীরিক শক্তি কতটা কাজে লাগে? শারীরিক ক্ষেত্রে নানা দিক দিয়ে পুরুষের চেয়ে এগিয়ে নারী। ‘লাইফ ডিরেক্ট’ অনুসারে সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।
নারীর রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা পুরুষের তুলনায় শক্তিশালী
ছবি: প্রথম আলো

নারীর রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা পুরুষের তুলনায় শক্তিশালী

একজন নারীর গড় আয়ু পুরুষের তুলনায় বেশি। পুরুষের তুলনায় নারীর হার্টের অসুখ হয় কম। নারী যেকোনো বিরূপ পরিস্থিতিতে পুরুষের তুলনায় সহজভাবে মানিয়ে নিতে পারে। দুর্যোগেও নারীর টিকে যাওয়ার হার বেশি। এমনকি সাত মাসে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুদের ভেতর কন্যাশিশুদের ‘বেঁচে থাকার হার’ বেশি। বেলজিয়ামের জেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা জানাচ্ছে, ওপরের ঘটনাগুলোর সঙ্গে নারীর এক্স ক্রোমোজমের সংযোগ রয়েছে!

নারীর স্মৃতিশক্তি ভালো

নারী দিনক্ষণ, মানুষের মুখ, নাম ও ঘটনা মনে রাখতে পারে বেশি। মুখস্থবিদ্যায় পুরুষের চেয়ে এগিয়ে নারী। বিশেষ করে মানুষের মুখ এবং ঘ্রাণ মনে রাখার ক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে ঢের এগিয়ে নারী।

পুরুষের চেয়ে অধিক ব্যথা সহ্য করতে পারে নারী

পুরুষেরা একটু ব্যথাতেই কাতর হয়ে পরেন
ছবি: প্রথম আলো

কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, নারী এমন সব ব্যথা সহ্য করতে পারে, যেগুলোর ব্যাপারে আগেই হাল ছেড়ে বসে থাকে পুরুষ! এর সঙ্গে অবশ্য নারীর মাতৃত্বের সরাসরি সংযোগ আছে। এখানে একটা মজার তথ্য দিয়ে রাখি। যদিও নারীর স্মৃতিশক্তি পুরুষের চেয়ে ভালো, তবে নারী ব্যথার স্মৃতি সহজে ভুলে যায়। অন্যদিকে পুরুষকে ব্যথার স্মৃতি তাড়া করে বেড়ায়। এ কারণেও পুরুষ ব্যথা কম সহ্য করতে পারে। বলা হয়, নারী যদি প্রসব বেদনার স্মৃতি মাথায় নিয়ে ঘুরত, তাহলে খুব কম মা–ই দ্বিতীয়বার মা হতে পারত বা মা হওয়ার ঝুঁকি নিত!

নারী বেশি রং দেখে

নারীরা বেশি রং দেখে
ছবি: প্রথম আলো

রং বিষয়ে নারীর ‘সংবেদনশীলতা’ নিয়ে অনেক মজার জোকস প্রচলিত আছে। এর অন্যতম কারণ হলো, পুরুষের চেয়ে অধিক রং দেখে নারী। নারীর ‘রং ভান্ডার’ পুরুষের চেয়ে ঢের বেশি। কাছাকাছি দুটি রংকে অনেক পুরুষই আলাদা করতে পারবে না। সেখানে নারীরা ওই দুটি রং থেকে আলাদা তরঙ্গদৈর্ঘ্য মনে রাখতে পারেন। ব্রুকলিন কলেজের গবেষণা যদিও বলছে, নারীর এই রং দেখার বিষয়টি যতটা না শারীরিক, তার চেয়ে বেশি সাইকোলজিক্যাল।

দেহঘড়ি অধিক সক্রিয়

কম ঘুমিয়ে ভালো পারফরম্যান্স অথবা ভোরে ঘুম থেকে ওঠার প্রবণতাও নালিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়
ছবি: প্রথম আলো

দেহঘড়ির ওপর গবেষণা করে ২০১৭ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দুই বিজ্ঞানী। নারীর ক্ষেত্রে দেহঘড়ি অধিক সক্রিয়। এ কারণে নারীর ভোরে ঘুম থেকে ওঠার প্রবণতাও বেশি। কেননা, এটি প্রকৃতির নিয়মের সঙ্গে ছন্দ মিলিয়ে চলতে পছন্দ করে।

কম ঘুমিয়ে বেশি পরিশ্রম

পুরুষ শারীরিকভাবে অধিক শক্তিশালী হলেও কম ঘুমিয়ে ভালো ‘পারফরম্যান্সের’ ক্ষেত্রেও এগিয়ে নারীরা। শারীরিক ও মানসিক—দুই দিক থেকেই কম ঘুমিয়ে বেশি পরিশ্রম করতে পারে নারীরা।