জিহ্বার নিচে সিস্ট, কী করবেন

জিহ্বার সমস্যায় চিকিৎসকের কাছে যেতে হবেছবি: পেক্সেলস

জিহ্বার নিচে খানিকটা ফোলা, যেন একটা থলি। একে বলে রেনুলা। রেনুলা মূলত মিউকাসপূর্ণ একটি সিস্ট, যা মুখের মেঝের মিউকাস গ্রন্থি থেকে উৎপত্তি লাভ করে। রেনুলা সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থিগুলোর সঙ্গে যুক্ত সাধারণ ক্ষত।

উৎপত্তি

এটি জিহ্বার নিচের লালাগ্রন্থি থেকে উৎপত্তি হয়। আঘাতের কারণে মুখের মেঝেতে থাকা সূক্ষ্ম নালিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা মুখগহ্বরের সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থি থেকে লালা নিষ্কাশনে বিঘ্ন ঘটায়।

এটি জেলির মতো তরল দিয়ে গঠিত হয়।

কার হয়

শিশু–কিশোরেরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। নারী ও পুরুষ উভয়েরই এ রোগ হতে পারে।

জিহ্বার নিচে খানিকটা ফোলা, যেন একটা থলি। একে বলে রেনুলা। রেনুলা মূলত মিউকাসপূর্ণ একটি সিস্ট, যা মুখের মেঝের মিউকাস গ্রন্থি থেকে উৎপত্তি লাভ করে।

শনাক্তকরণ

স্বচ্ছ, নীল ফোলা হিসেবে মুখের মেঝেতে দেখা যায়। এটি সাধারণত জিহ্বার ফ্রেনুলারের এক পাশে হয়। আকৃতিতে গোলাকার ও গম্বুজ আকারের হয়ে থাকে। আকার ১ সেমি থেকে ৫ সেমি ব্যাসার্ধের হয়।

মসৃণ পৃষ্ঠ

  • মিউকাস পর্দাটি ফোলার ওপর দিয়ে নড়ে। 

লক্ষণ ও উপসর্গ

  • জিহ্বার উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে খাবার গিলতে অসুবিধা হয়।

  • ফোলা স্থির নয় এবং মূলত ব্যথাহীন (যদি না এটি দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হয়)

  • রেনুলা উপসর্গবিহীনও হতে পারে।

চিহ্নিতকরণের উপায়

  • ফোলার প্রান্ত বা কিনারা হাত দিয়ে অনুভব করে বোঝা কষ্টকর।

  • চাপ দিয়ে ধরলে ব্যথা অনুভব হয় না।

  • ফ্লাকচুয়েশন টেস্ট ইতিবাচক।

  • গলার লিম্ফ নোড বড় হয় না।

গলার রেনুলা

মুখের মধ্যে ফোলাসহ বা ফোলা ছাড়াই, ঘাড়ে ফোলা হিসেবে পাওয়া যেতে পারে, এটাকে প্লানজিং টাইপ বা ডাইভিং টাইপ রেনুলা বলে।

একটি রেনুলা অনেক সেমি ব্যাসের একটি বড় ক্ষতে পরিণত হয়, ফলে জিহ্বার উচ্চতা বৃদ্ধি পায়।

রোগনির্ণয়

ঘাড়ের আলট্রাসনোগ্রাফি বা ঘাড় ও মুখগহ্বরের এমআরআই করে রেনুলা শনাক্ত করা যায়। 

চিকিৎসাপদ্ধতি

  • যদি রেনুলা আকারে ছোট হয়, তাহলে সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থি অপসারণ করে এর চিকিৎসা করা হয়ে থাকে।

  • যদি রেনুলা আকারে বড় হয়, মার্সুপিয়ালাইজেশন ব্যবহার করা যেতে পারে। সেখানে অভ্যন্তরীণ মৌখিক ক্ষতটি খোলা হয়, যার উদ্দেশ্য হলো মুখগহ্বরের সঙ্গে সাবলিঙ্গুয়াল গ্রন্থির পুনরায় সংযোগ স্থাপন করা।

  • তবে অনেক ক্ষেত্রে রেনুলার পাতলা আবরণের কারণে রেনুলা অস্ত্রোপচার করে অপসারণ করা সম্ভব না–ও হতে পারে।

ঝুঁকি

  • বারবার সংক্রমণ।

  • আকারে বড় রেনুলা, খাবার গিলতে এবং কথা বলতে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

  • অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ঢাকা