এই গরমে পানিশূন্যতা হচ্ছে কি না কীভাবে বুঝবেন

তীব্র গরমে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। গরমে ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বের হয়ে যায় প্রয়োজনীয় লবণ যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম। তাই পানিশূন্যতা হচ্ছে কি না, সঠিক সময়ে বুঝতে না পারলে বিপদ। শরীরে যখন পর্যাপ্ত পানি বা তরল থাকে না, তখন দেখা যায় কিছু লক্ষণ।

পানি পান করুন যত বেশি সম্ভব
ছবি: প্রথম আলো

প্রস্রাবের রঙের পরিবর্তন

প্রস্রাবের রং হালকা হলুদ থেকে গাঢ় হলুদ হয়ে যাওয়া এবং তাতে তীব্র দুর্গন্ধ পানিশূন্যতা নির্দেশ করে। পরে প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য

কোষ্ঠকাঠিন্য, বুক জ্বালাপোড়া ও বদহজমের মতো পরিপাকতন্ত্রের নানা সমস্যা পানিশূন্যতার লক্ষণ।

মুখে দুর্গন্ধ হওয়া

শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিলে মুখে লালা তৈরি কমে যাবে। এতে করে মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়া বেশি তৈরি হওয়ার পরিবেশ পায় যা মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে।

অবসন্ন বা দুর্বল ভাব

পানিশূন্যতা দেখা দিলে শরীরে অবসন্ন ভাব চলে আসে। কোনো কিছুতেই ঠিকমতো মনোযোগ বসে না।

মাথাব্যথা

পানিশূন্যতা হলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন ও রক্তপ্রবাহ কমে যায়। এ থেকে শুরু হয় মাথাব্যথা।

শুষ্ক রুক্ষ ত্বক

পানিশূন্যতা শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বকের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। মুখে ব্রণ বা গরমে ঠোঁট ফাটা, এমনকি মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে বেশি খুশকি হওয়াও পানিশূন্যতার লক্ষণ।

শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে মাথা ব্যথা হতে পারে
ছবি : প্রথম আলো

শরীরে লবণের ঘাটতি

অধিক পানিশূন্যতায় দেহে লবণের ঘাটতিজনিত লক্ষণ প্রকট হয়ে ওঠে। যেমন ভারসাম্য হারানো, হাত–পায়ের দুর্বলতা, মাথা ঘোরানো, অস্বস্তিবোধ হওয়া বা শ্বাসপ্রশ্বাসের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া।

শিশুদের ক্ষেত্রে

প্রস্রাব স্বাভাবিকের চেয়ে কম হওয়া, খেলাধুলা কম করা, বেশি বেশি শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া, অল্পতেই হাঁপিয়ে ওঠা, বারবার পানি খেতে চাওয়া, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, জিহ্বা শুকনো মনে হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেওয়া।

প্রতিরোধের উপায়

দিনে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করতে হবে, হিসাব করে খেলে সাধারণ গ্লাসের ৮-৯ গ্লাস পানি।

সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানি পান করতে হবে। এটি বদহজম কমাতে বেশ ভালো কাজ করে।

ব্যাগে সব সময় পানির বোতল রাখা আপনাকে পর্যাপ্ত পানি খেতে খানিকটা উৎসাহ দেবে।

দিনে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করতে হবে
ছবি: কবির হোসেন

খাদ্যতালিকায় পানিজাতীয় সবজি ও ফল রাখা যেতে পারে। যেমন শসা, তরমুজ, টমেটো ইত্যাদি।

সম্ভব হলে সপ্তাহে অন্তত ৩-৪টি ওরস্যালাইন সঠিক নিয়মে গুলিয়ে খেলে পানিশূন্যতার সঙ্গে সঙ্গে লবণের পরিমাণও ঠিক রাখতে সাহায্য করবে।

কিডনিজনিত রোগে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের জন্য দৈনিক পানির পরিমাণ কতটুকু হবে, তার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডা. হিমেল বিশ্বাস, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা, নিউরোমেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, পান্থপথ, ঢাকা।