শিশুর ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকলে দুধের বিকল্প হিসেবে কী খাবে
শিশুর প্রধান খাদ্যই দুধ। তবে শিশুর ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকলে এই আদর্শ খাবার পেটে সয় না। ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স এমন এক শারীরিক অবস্থা, যেখানে শিশুর শরীরের ল্যাকটেজ নামের একধরনের এনজাইম বা পাচকরসের অভাব থাকে। ফলে দুধে থাকা ল্যাকটোজ নামের শর্করা হজম হয় না। দুধ অপাচ্য থাকায় দুধ খাওয়ার পর শিশুর নানারকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।
ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের লক্ষণ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। তবে সাধারণত দেখা যায়, দুধ খাওয়ার পর শিশুর পেট ফেঁপে থাকে; পেটব্যথা, অস্বস্তি ও ডায়রিয়া হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ওজন বাড়ে না। কারও কারও ক্ষেত্রে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার—সবকিছুতেই সমস্যা হয়; আবার কারও কারও ক্ষেত্রে শুধু দুধ খেলেই এই সমস্যা হয়। বয়স ভেদেও লক্ষণের তারতম্য হতে পারে। এর কারণ নির্ভর করে ঠিক কী পরিমাণ এনজাইমের ঘাটতি তার শরীরে বিদ্যমান।
অনেক শিশুর জন্মগত ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকে, যাদের একদমই ল্যাকটেজ এনজাইম উৎপন্ন হয় না। তাদের ক্ষেত্রে দুধের ল্যাকটোজ একদমই হজম হয় না, যা শিশুর ক্ষেত্রে খুবই মারাত্মক হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনে জেনেটিক টেস্ট করে চিকিৎসা করতে হতে পারে।
আবার যেসব শিশু সময়ের আগে জন্মায়, তাদের ক্ষেত্রেও ল্যাকটেজ প্রথম দিকে নিঃসরণ হতে দেরি হতে পারে। সে ক্ষেত্রেও শিশুর ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে। তবে শিশুর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই অবস্থার উন্নতি হতে পারে।
আবার শিশুর ডায়রিয়া বা অন্য কোনো অসুস্থতা থাকলে বা কোনো অ্যান্টিবায়োটিক কিংবা অন্য কোনো ওষুধের কারণেও শিশুর ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স হতে পারে।
জন্মগত কারণে এই সমস্যা যাদের থাকে, তাদের চিকিৎসার জন্য জন্মের পর থেকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে মাতৃদুগ্ধ পান থেকে বিরত রাখতে বলা হয়। বিকল্প হিসেবে শিশুদের সয়া দুধ, নারকেলের দুধ, জই দুধ (ওট মিল্ক), চাল দুধ, কাজু দুধ দেওয়া যেতে পারে। শিশুদের জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের ল্যাকটেজ ফ্রি দুধ পাওয়া যায়। যেসব শিশু সরাসরি দুধ খেতে চায় না, তাদের দুধ দিয়ে তৈরি অন্য কোনো খাবার দেওয়া যেতে পারে।
যদি শিশুর খাবারের পুষ্টির অভাবে ওজন একদমই না বাড়ে অথবা ডিহাইড্রেশন হয়ে যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ডা. ফারাহ দোলা, বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর