পরোপকারে এই শারীরিক উপকারগুলোও মেলে
ছোটবেলায় সবাই পড়েছি পরোপকারিতার কথা। মানুষকে সাহায্য করার জন্য বিশাল আয়োজন করতেই হবে, তার কিন্তু মানে নেই। সামান্য কাজের মাধ্যমেও মানুষের উপকার করা সম্ভব। এগুলো কিন্তু আপনার শরীরের জন্যও উপকারী। জেনে নিন সেসব উপকারের কথা।
ছোটবেলায় সবাই পড়েছি পরোপকারিতার কথা। তাই নিয়ে কত বাণী আছে—সেবাই পরম ধর্ম; ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ এবং সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। অনেকে করেনও। অন্যের বিপদ দেখলে রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়েন। তবে সবার পক্ষে তা সম্ভবপর হয় না। তবে মানুষকে সাহায্য করার জন্য বিশাল আয়োজন করতেই হবে, তার কিন্তু মানে নেই। সামান্য কাজের মাধ্যমেও মানুষের উপকার করা সম্ভব। যেগুলোকে ইংরেজিতে বলে ‘র্যান্ডম অ্যাক্টস অব কাইন্ডনেস’। এগুলো কিন্তু আপনার শরীরের জন্যও উপকারী। জেনে নিন সেসব উপকারের কথা।
নিজের মধ্যে তৈরি করে ভালো লাগার অনুভূতি
কোনো বিনিময়ের প্রত্যাশা ছাড়া অন্যের উপকার করাই পরোপকারিতা। এটাকে আপনার মস্তিষ্ক স্বয়ং ভালো কাজের স্বীকৃতি দেয়। সে এটার জন্য আপনার নিজের মধ্যে একধরনের পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি সৃষ্টি করে। শরীরে ছড়িয়ে পড়ে ভালো লাগার অনুভব সৃষ্টিকারী উপাদান। এতে আপনার মানসিক উদ্বেগ ও হতাশা কমে। দূর হয় মানসিক বৈকল্যের ঝুঁকি। বাড়ে আয়ু।
ওষুধ ছাড়াই নিয়ন্ত্রণে রাখে রক্তচাপ
পরোপকার বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে সামাজিক আচারে অংশগ্রহণ সরাসরি আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর খাবার ও শরীরচর্চার মতোই এটা উপকারী।
প্রশমন করে শারীরিক ব্যথা
পরোপকার কেবল রক্তচাপই নয়, কমায় ব্যথার অনুভূতিও। আপনার দানের আগ্রহ যত বেশি হবে, কষ্ট সহিষ্ণুতাও তত বাড়বে। এর কারণও আছে। আপনি যখন ব্যথা পান, তখন মস্তিষ্কের একটা অংশ তাতে সাড়া দিয়ে কষ্টের অনুভূতি সৃষ্টি করে। আপনি যখনই দান করার অভিজ্ঞতা পাবেন, সেই অংশটা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে সুখ
মানুষ সুখের জন্য কত কিছু করে। কেউ নতুন নতুন কাজে নিজেকে জড়িয়ে রাখে। কেউ নিজেকে বেঁধে ফেলে নিয়মের শৃঙ্খলে। আরও ভালো হয় যদি নিত্যনতুন উপায়ে পরোপকার করতে পারেন। মানুষকে সাহায্য করতে পারেন। সে কাজই আপনাকে সুখী রাখবে।
কীভাবে করবেন পরোপকার
পরোপকার বলতে আমরা মূলত বুঝি দান-খয়রাত। সেটা একটা বড় উপায় বটে, তবে একমাত্র নয়। এমনকি আপনার নিয়মিত কাজের মধ্যে দিয়েও আপনি মানুষকে সহায়তা করতে পারেন। হয়তো আপনি গাড়ি বা মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন। খেয়াল করুন, আপনার জন্য আশপাশের মানুষের ক্ষতি হচ্ছে কি না। হয়তো কোনো গাড়ি ভুল লেনে চলে গেছে। আপনার কাছে জায়গা চাচ্ছে সঠিক লেনে আসার। তাকে জায়গা করে দিন। সেটাও কিন্তু তার উপকার করা।
এমনি ছোটখাটো পরোপকার করতে পারেন আরও সহস্র উপায়ে। কাউকে একটা ভালো পরামর্শ দিতে পারেন। তাই বলে অহেতুক পরামর্শ দিতে যাবেন না। আশপাশের মানুষেরা যখনই কোনো ভালো কাজ করবে, তার প্রশংসা করুন। উৎসাহ দিন। মানুষ ভুল করলে তাঁকে ক্ষমা করুন। বন্ধুর খারাপ সময়ে তাঁর পাশে থাকুন। তাঁর সমস্যার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। সমাধান করে দেওয়ার দরকার নেই। খারাপ সময়ে কাউকে পাশে পাওয়া, যাঁর সঙ্গে মন খুলে কথা বলা যায়, সেটাই অনেকটা হালকা করে দেয়।
মোদ্দা কথা, মানুষের ভালো করুন। দেখবেন, নিজেও ভালো থাকছেন। শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকছে। আর আপনার পৃথিবীটাও আগের চেয়ে অনেক সুন্দর হয়ে উঠছে।