ঘুমাতে প্রায় দুইটা বেজে যায়, কী করি

পরামর্শ দিয়েছেন—ঢাকার কলাবাগানে অবস্থিত ল্যাবএইড আইকনিক–এর মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ফারজানা পারভীন নূপুর

রাতে নানা কারণে অনেকের ঘুমাতে দেরি হয়ে যায়ছবি: পেক্সেলস

প্রশ্ন: আমি একাদশ শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী। প্রতিরাতে বিছানায় যেতে যেতে রাত একটা–দেড়টা বেজে যায়। বিছানায় গেলেই আবার সঙ্গে সঙ্গে ঘুম আসে না, ঘুমাতে প্রায় দুইটা বেজে যায়। কিন্তু আমার ক্লাস শুরু হয় সাড়ে আটটায়। এত রাতে ঘুমিয়ে সকালে উঠতে সমস্যা হয়। এক মাস পর পরীক্ষা, অথচ ঘুমের এ সমস্যার কারণে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। পড়াশোনা করার জন্য ঘুমটা দরকার। এখন আমি কি ঘুমানোর জন্য কোনো ওষুধ খাব? দয়া করে পরামর্শ দেবেন।

জাবের আহামেদ, ময়মনসিংহ।

পরামর্শ: রাত দেড়টা-দুইটায় ঘুমাতে যাওয়ার বদভ্যাস পরিহার করে আরও তাড়াতাড়ি ঘুমানোর অভ্যাস তৈরি কর। তোমার বয়সী কিশোরদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস যেমন কম্পিউটার, মুঠোফোন ইত্যাদি ব্যবহারে আসক্তি দেখা যায়। ঘুমের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সবার আগে এসব ডিভাইস ব্যবহার কমাতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কোনো ধরনের ঘুমের ওষুধ খাবে না। এটি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুকির কারণ হতে পারে।

দিনের যেকোনো সময় শারীরিক কার্যকলাপ, যেমন হাঁটাহাঁটি, দৌড়ানো কিংবা যেকোনো ধরনের ব্যায়াম করতে পারো। এতে রাতে দ্রুত ঘুম চলে আসবে। তবে মনে রাখতে হবে, দিনে ভুল করেও ঘুমানো যাবে না। রাত ১০টায় ঘুমিয়ে পড়া সবচেয়ে উত্তম। সে ক্ষেত্রে সন্ধ্যার পরপর রাতের খাবার খেয়ে নিতে পারো। ঘুমানোর কমপক্ষে দুই ঘণ্টা আগে থেকে মুঠোফোন ও কম্পিটার ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। যখন শুয়ে পড়বে, তখন আর কোনো ধরনের কাজের কথা ভাববে না। ঘুম না এলেও চুপচাপ শুয়ে থাকবে।

আরও পড়ুন

প্রথম প্রথম দেখা যাবে শুয়ে আছ, তবু ঘুম আসছে না। তবে এভাবে কয়েক দিন চেষ্টা করলে শরীর অভ্যস্ত হয়ে যাবে। ধীরে ধীরে ঘুমের এমন যন্ত্রণাদায়ক সমস্যাও কেটে যাবে। এরপরও যদি উপকার না পাও, তাহলে একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে পারো। অনেক সময় শরীরের অন্য কোনো রোগ বা জটিলতার উপসর্গ হিসেবে নিদ্রাহীনতা তৈরি হয়। যদি শরীরে কোনো ব্যথা, মাইগ্রেনের সমস্যা, রেনাল ডিজিজ, অটো ইমিউন ডিজিজ থাকে, তাহলেও ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরিক্ষা করিয়ে নাও। সঠিক কারণ নির্ণয় করে সুচিকিৎসা গ্রহণ করলে আশা করি উপকার পাবে।

আরও পড়ুন