শিশুর স্থূলতা কেন হয়

অনেকে বাচ্চাদের সুজি, সাগু, বিস্কুট, পাউরুটিসহ কার্বোহাইড্রেট–সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়ান। এতে বাচ্চা মুটিয়ে যেতে পারে

বর্তমান সময়ে চাইল্ড ওবিসিটি বা শিশুর স্থূলতা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। দেশে সাধারণত একটি শিশুর জন্মের সময় তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি ওজন থাকে। পরে কেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কেউ কেউ মুটিয়ে যায়, তা জানা জরুরি।

মায়ের অনভিজ্ঞতা

জন্মের ছয় মাস পর্যন্ত শিশু শুধু মায়ের বুকের দুধ খেয়েই জীবনধারণ করে। এরপর মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার খাওয়া শুরু করে। তখন বেশির ভাগ মা–ই বুঝতে পারেন না, বাচ্চাকে কোন খাবার, কী পরিমাণে দেবেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মায়েরা বাচ্চাদের সুজি, সাগু, বিস্কুট, পাউরুটিসহ কার্বোহাইড্রেট–সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়ান। এতে বাচ্চা মুটিয়ে যেতে পারে।

অনেকে বাচ্চাদের সুজি, সাগু, বিস্কুট, পাউরুটিসহ কার্বোহাইড্রেট–সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়ান। এতে বাচ্চা মুটিয়ে যেতে পারে।

বাবার ভূমিকা

শিশুর মুটিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাবারও ভূমিকা আছে। বাচ্চাকে নিয়ে বাবা বেড়াতে গেলে আদর করে চিপস, চকলেট, আইসক্রিমের মতো অধিক ক্যালরিযুক্ত খাবার কিনে দেন। অনেকে রোজ অফিস থেকে ফেরার পথেও শিশুর জন্য এসব খাবার আনেন। তাঁরা বোঝেন না, এই আদর সন্তানের জন্য ক্ষতিকর।

আত্মীয়স্বজনের ভূমিকা

বাড়িতে যখন কেউ বেড়াতে আসেন, তখন হাতে করে বাচ্চাদের জন্য চকলেট, কেক, ডোনাট, আইসক্রিম–জাতীয় খাবার আনেন। এসব খেয়ে বাচ্চার স্থূলতা বাড়তে পারে।

ওজন বাড়লে করণীয় কী

বাড়ন্ত সময় শিশুর ওজন কমাতে গেলে স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হতে পারে। এর ফলে ওজন কমানোর নামে খাবার কমিয়ে দিলে পুষ্টির অভাব হবে। তবে শিশুদের ওজন না কমানোই ভালো। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই ঠিক।

মা–বাবাকে বোঝাতে হবে, ওজন না কমিয়ে বরং ওজন যেটা আছে, সেটা ধরে রাখতে হবে। অর্থাৎ, ওজন আর যেন না বাড়ে। শিশুটি যখন ধীরে ধীরে লম্বা হবে, তখন এই ওজনটাই তার উচ্চতার সঙ্গে আদর্শ ওজন হয়ে যাবে। ওজন একান্তই কমাতে হলে মাসে সর্বোচ্চ ১ থেকে ২ কেজি করে কমাতে হবে।

কোনো বাচ্চার বয়স ১১ বছর, ওজন ৫৫ কেজি এবং উচ্চতা ১৪৪ সেন্টিমিটার হলে তা অস্বাভাবিক। এই বয়সে স্বাভাবিক ওজন হবে ৪০ কেজি। এই ৫৫ কেজি ওজন আগামী এক বছর না বাড়লে এক বছর পরে তার বয়স হবে ১২ বছর। ১২ বছর বয়সে বাচ্চার স্বাভাবিক ওজন হয় ৪৭ কেজি এবং উচ্চতা ১৫৪ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ, শিশুর ওজন এখন মাত্র আট কেজি বেশি। এ ক্ষেত্রে ওজন না কমিয়েও শিশুর অতিরিক্ত ওজন ৭ কেজি কমে গেছে, যা আগে ছিল ১৫ কেজি।

আর এর মধ্যে মাসে ৫০০ গ্রাম করেও ওজন কমানো গেলে অতিরিক্ত আরও ৬ কেজি ওজন কমবে। সে ক্ষেত্রে এক বছরেই বাচ্চার আদর্শ ওজন হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে শুরুতে বাচ্চার ‘ব্যালান্সড ডায়েট’ নিশ্চিত করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন।

আগামীকাল পড়ুন:  অত্যধিক নাকের ড্রপ বা স্প্রে ব্যবহারে শিশুর ক্ষতি