গর্ভধারণের আগে খাবারদাবারে কী কী নিয়ম মেনে চলা জরুরি

ডায়েট, ব্যায়াম ও ওজন কমানো–বাড়ানো নিয়ে পাঠকদের নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান শামছুন্নাহার নাহিদ

প্রশ্ন: আমি একজন নারী। বয়স ৩৩ বছর। উচ্চতা ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি, ওজন ৭৫ কেজি। বিয়ে হয়েছে দুই বছর হলো। এখন সন্তান নেওয়ার কথা ভাবছি। আমার ওজন কতটা কমাতে হবে? আর এই সময়ে আমাকে কী ধরনের খাবার খেতে হবে, বুঝতে পারছি না। গর্ভধারণের জন্য খাবারদাবারে কী কী নিয়ম মেনে চলা জরুরি, পরামর্শ দিলে উপকার হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

শামসুন্নাহার নাহিদ
ছবি: প্রথম আলো

উত্তর: উচ্চতা অনুসারে আপনার ওজন থাকা দরকার ৫৫-৬৯ কেজির মধ্যে। তাই আপনাকে সন্তান নেওয়ার আগে কমপক্ষে ৬-৭ কেজি ওজন কমাতে হবে।

একটা সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে ‘গর্ভধারণের পূর্বপ্রস্তুতি’ বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই প্রস্তুতিতে যে বিষয়গুলো সন্তান ধারণকারীর দেখা প্রয়োজন—

  • ওজন স্বাভাবিক অবস্থায় রাখা। বেশি থাকলে কমিয়ে আনা আর কম থাকলে বাড়িয়ে নেওয়া।

  • কোনো ধরনের অসুস্থতা আছে কি না; যেমন ডায়াবেটিস বা প্রেশার বেশি আছে কি না, অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে তার চিকিৎসা বা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে অবস্থা স্বাভাবিক করে নিতে হবে। কারণ, অন্তঃসত্ত্বার ডায়াবেটিস বা প্রেশার বেশি থাকলে গর্ভের সন্তানের অনেক ধরনের ত্রুটি দেখা দেওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।

  • সন্তান ধারণে ইচ্ছুক নারীর পুষ্টিগত অবস্থা দেখে নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে অ্যানিমিয়া/রক্তস্বল্পতাসহ অন্য কোনো পুষ্টিহীনতা থাকলে গর্ভের সন্তানেরও পুষ্টিহীন হয়ে জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি থাকে।

  • পাশাপাশি আগে থেকে যদি কোনো রোগ থাকে, তার সঠিক চিকিৎসা করে পরিকল্পিতভাবে সন্তান ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

  • গর্ভধারণের আগে তাই প্রতিদিন আপনার খাবারে থাকবে সব কটি পুষ্টি উপাদান। বিশেষ করে যে পুষ্টি উপাদানগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো:

১. ফলিক অ্যাসিড–সমৃদ্ধ খাবার; যার মধ্যে আছে সব ধরনের ডাল, বিচি, বাদাম, ডিম, সবুজ শাক, সবজি, বিটরুট, সাইট্রাস ফল, পেপে, কলা ইত্যাদি।

২. ক্যালসিয়াম–সমৃদ্ধ খাবার। দুধ, দুধের তৈরি খাবার, সয়াবিন, বাদাম, দুধ, ক্যালসিয়াম ফরটিফাইড খাবার ইত্যাদি।

৩. আয়রন লেভেল ঠিক রাখতে ভিটামিন সি, বি ১২, ভিটামিন ডি তৈরিতে সহায়ক খাবার খেতে হবে।

৪. স্বাস্থ্যকর উদ্ভিজ্জ তেল (ওমেগা ৩, ৬–সমৃদ্ধ)

৫. শরীরের চাহিদা অনুযায়ী শক্তি পেতে শর্করা খেতে হবে।

শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করে তবেই সন্তান ধারণ করা উচিত। এতে একজন নারী একদিকে যেমন একটি সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে পারবেন, পাশাপাশি ওই সন্তানের পরবর্তী জীবনে যেকোনো অসুস্থতা প্রতিরোধ করা সহজ হবে।

পাঠকের প্রশ্ন, বিশেষজ্ঞের উত্তর

পাঠকের প্রশ্ন পাঠানো যাবে ই–মেইলে, ডাকে এবং প্র অধুনার ফেসবুক পেজের ইনবক্সে।

ই–মেইল ঠিকানা: [email protected] 

(সাবজেক্ট হিসেবে লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’)

ডাক ঠিকানা: প্র অধুনা, প্রথম আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫।

(খামের ওপর লিখুন ‘পাঠকের প্রশ্ন’), ফেসবুক পেজ: fb.com/Adhuna.PA