শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েরা কী খাবেন 

ছবি: পেক্সেলস

জন্মের পর থেকে শিশুর পুষ্টি, বৃদ্ধি ও বিকাশের যাবতীয় চাহিদা মায়ের দুধেই মেটানো যায়। শিশু পাঁচ-ছয় মাস বয়সে অন্যান্য খাবার গ্রহণ শুরু করলেও দুই বছর বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধ প্রয়োজন হয়। মায়েরা এ সময় উদ্বিগ্ন থাকেন যে দুধে শিশু পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে কি না, কী খেলে দুধ বাড়বে বা এর পুষ্টিমান বাড়বে। অনেকে দুধ যাতে না কমে যায়, সে জন্য বেশি বেশি খেতে থাকেন। কিন্তু শুধু বেশি খেলে চলবে না। খেতে হবে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার। 

তাই মায়ের খাদ্যপরিকল্পনা এমন হবে, যা তাঁর পুষ্টি জোগাবে, কিন্তু অত্যধিক ওজন বাড়াবে না। এ পরিকল্পনা কেমন হবে, আসুন জেনে নেওয়া যাক: 

● পর্যাপ্ত ক্যালরি গ্রহণ: বুকের দুধ খাওয়াতে প্রয়োজন অতিরিক্ত ক্যালরি। এ সময় মায়ের শরীরের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন ৫০০-৭০০ ক্যালরি চাহিদা বাড়ে। 

● প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার: চর্বিহীন মাংস, মাছ, ডিম, লেবু, বাদাম ও বীজ প্রোটিনের চমৎকার উৎস; যা স্বাস্থ্য ভালো রাখা এবং দুধ উৎপাদন—উভয় ক্ষেত্রে সাহায্য করে। 

● ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার: মা ও শিশুর হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম দরকার। দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য, কাঁটাসহ ছোট মাছ খেতে হবে। 

● হাইড্রেটেড থাকুন: ডি–হাইড্রেশন এড়াতে ও দুধ যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আসে, সে কথা মাথায় রেখে সারা দিন যথেষ্ট তরল পান করুন। মা প্রতিবার সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর আগে এক গ্লাস পানি পান করে নেবেন। 

● এ ছাড়া আয়রনের ঘাটতি রোধে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার, যেমন চর্বিহীন মাংস, কলিজা, ডিমের কুসুম, সবজি, সবুজ শাক খেতে হবে। মা ও শিশুকে প্রতিদিন ২০ মিনিট রোদে থাকতে হবে। এতে দুজনেরই ভিটামিন ডির চাহিদা পূরণ হবে। 

বুকে দুধ আসছে না বলে অনেক মা অভিযোগ করেন। কিন্তু এটা কোনো সমস্যাই নয়। বুকে দুধ আসা হরমোন দিয়ে প্রভাবিত হয়। অক্সিটোসিন ও প্রোল্যাক্টিন হরমোনের ক্ষরণে বুকের দুধ তৈরি হয়। কোনো মায়ের দুধ কম এলেও মাকে চেষ্টা চালিয়ে যেতেই হবে। বারবার শিশুকে দিয়ে দুধ টানাতে হবে, তাতেই দুধ আসবে। মনে রাখবেন, প্রত্যেক নারীর শারীরিক অবস্থা আলাদা। সময় অনুসারে তাঁর চাহিদা পরিবর্তিত হতে পারে। তাই পরামর্শের জন্য কোনো ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

লাজিনা ইসলাম চৌধুরী, পুষ্টিবিদ, পিপলস হাসপাতাল, মালিবাগ, ঢাকা