এসির ঠান্ডায় কারও কারও সমস্যা হয় কেন

এসির ঠান্ডায় অনবরত হাঁচি, নাক থেকে পানি পড়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে
ছবি: খালেদ সরকার

গরম থেকে স্বস্তির জন্য আমরা অনেক সময় ঘরে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এয়ার কন্ডিশনার বা এসি) ব্যবহার করি। যাঁরা বাসায় এসি ব্যবহার করতে চান না, তাঁদেরও অফিসে, রেস্তোরাঁয় কিংবা দূরপাল্লার বাসে অনেক সময় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত আবদ্ধ জায়গায় থাকতে হয়। কিন্তু দেখা যায়, অনেকেই এতে ঠিক স্বস্তি বোধ করেন না। কারও কারও নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে, যাঁদের অ্যাজমা ও অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাঁদের মধ্যে নানা শারীরিক লক্ষণ দেখা যায় প্রকটভাবে।

শারীরিক সমস্যা

১. পানিশূন্যতা
এসি সাধারণত ঘরের আর্দ্রতা কমিয়ে ঘর ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করে। ফলে আমাদের ত্বক আর্দ্রতা হারিয়ে শুষ্ক হয়ে যায়। চামড়া ও ঠোঁট শুকিয়ে ফেটে যেতে পারে। চুল হয়ে যেতে পারে শুষ্ক।
২. মাথাব্যথা
দীর্ঘ সময় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে মাথাব্যথার সমস্যা বেড়ে যায়। বেড়ে যেতে পারে মাইগ্রেনের অ্যাটাক। গবেষণায় দেখা গেছে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দীর্ঘ সময় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে ১৬ শতাংশ মানুষের মাথাব্যথা হয় এবং এর মধ্যে ৮ শতাংশ মানুষের প্রতিদিনই মাথাব্যথার সমস্যা হয়।
৩. শুষ্ক চোখ
এসি থেকে পরিবেশের আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় চোখ শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। এ কারণে চোখে জ্বালাপোড়া, চুলকানিসহ চোখে ঝাপসা দেখার মতো সমস্যাও হতে পারে।
৪. ক্লান্ত লাগা
গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় এসি রুমে কাজ করলে শরীরে ক্লান্তি ভাব দেখা দেয়।
৫. অ্যাজমা ও অ্যালার্জি
এসি নিয়মিত পরিষ্কার না করা হলে বদ্ধ ঘরে আবর্তিত হতে থাকে দূষিত বায়ু। সেখান থেকে ধুলাবালু বা অ্যালার্জেন শরীরে প্রবেশ করে হতে পারে নানা রকম অ্যালার্জির সমস্যা। চোখ–কান–গলায় অস্বস্তি ভাব, অনবরত হাঁচি, নাক থেকে পানি পড়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। হাঁপানির সমস্যা যাঁদের আছে, তাঁদের হাঁপানির সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।

৬. সংক্রামক ব্যাধি
দীর্ঘসময় এসিতে থাকার ফলে আমাদের ফুসফুসের রাস্তাগুলো ড্রাই হয়ে যায়। নাকের ভেতরে অস্বস্তি হয়। যার কারণে আমাদের শরীরে খুব সহজে নানা রকম ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে, যা থেকে দেখা দিতে পারে জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট।

শীতাতপকক্ষে নিজের যত্ন


১. নিয়মিত ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ঠোঁটের যত্নে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন।
২. শরীরে পানির চাহিদা পূরণে দিনে অন্তত আট গ্লাস পানি পান করতে হবে।
৩. দীর্ঘ সময় এসির বাতাসে না থেকে বিরতি নিন।
৪. রাতে ঘুমানোর সময় এসির পাশাপাশি আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহার করতে পারেন।
৫. নিয়মিত এসির ফিল্টার পরিষ্কার করা জরুরি।
৬. ধূমপান পরিহার করতে হবে।

আরও পড়ুন