মা হওয়ার পর ওজন বেড়েছে, এখন কমাতে কী করব

ডায়েট, ব্যায়াম ও ওজন কমানো– বাড়ানো নিয়ে পাঠকদের নির্বাচিত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান শামছুন্নাহার নাহিদ

প্রশ্ন: আমার সন্তানের বয়স ৮ মাস। প্রথমবার মা হলাম। তাই সন্তানকে ঠিকমতো খাওয়াতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু সন্তান জন্মের পর আমার ওজন অনেকটা বেড়ে গেছে। এখন যেহেতু সন্তান দুধের পাশাপাশি অন্য খাবার খেতে শুরু করেছে, তাই নিজের ওজন কমাতে চাচ্ছি। আমার উচ্চতা মেনে যে ওজন থাকা উচিত এখন তার চেয়ে ১৩ কেজি বেশি আছে। কীভাবে খাওয়াদাওয়া করে এই ওজন কমাব, পরামর্শ চাই।

সুরভী, চট্টগ্রাম

শামছুন্নাহার নাহিদ

উত্তর: আপনি এখন আপনার সন্তানকে কমপ্লিমেন্টারি ফিডিং দিচ্ছেন। তবে এর পাশাপাশি আপনাকে বুকের দুধ চালিয়ে যেতে হবে সন্তানের বয়স ২ বছর না হওয়া পর্যন্ত। মানে, আপনার নিজেকে একজন স্তন্যদানকারী মা হিসেবে চিন্তা করতে হবে, পাশাপাশি আপনার ওজন কমানোর উপায় জানতে ও মানতে হবে। একজন পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলে আপনার খাবারের একটা চার্ট করে নিতে পারেন। কারণ, এখন আপনার খাবারের পরিমাণ আগের থেকে কিছুটা কম হবে। পুষ্টিবিদ আপনার শরীরের সবদিক বিবেচনা করে ডায়েট ঠিক করে দেবেন। আপনাকে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে—

১. আপনার খাবার কম ক্যালরি সম্পন্ন হবে। তাই রান্নায় যতটা সম্ভব কম তেল ব্যবহার করবেন।

২. প্রতিদিন প্রতিবেলার খাবার একই সময় এবং একই পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করবেন, যাতে আপনার খাওয়া খাবারের হজম সহজ হয়।

৩. চেষ্টা করবেন একবারে বেশি না খেয়ে, ওই খাবারটাকে ভাগ করে কয়েকবারে খেতে। এতে ওই খাবারের ক্যালরি আপনার শরীরে জমতে পারবে না। ফলে আপনার শরীরে নতুন করে ওজন বাড়ার সুযোগ থাকবে না।

৪. আপনার সন্তানের বুকের দুধের সরবরাহ ঠিক রাখতে প্রতিদিন দুধ, ডিম, মাছ, মুরগি ও ডাল খাদ্যতালিকায় রাখবেন। এসব রান্নায় তরল বা ঝোল রাখবেন বেশি। সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর জন্য মায়ের শরীরে বাড়তি পানি বা ফ্লুইডের প্রয়োজন পড়ে।

৫. আপনার বাড়তি ওজন কমাতে হলে জমে থাকা মেদ ধীরে ধীরে খরচ করতে হবে। প্রতিদিন ব্যায়াম, শারীরিক পরিশ্রম কিছুটা বাড়াতে হবে।

মনে রাখবেন, প্রসূতি মায়ের শরীরে কিছু হরমোন বেশি থাকে, তাই ধীরে ধীরে ওজন কমবে। দ্রুত কমানোর চেষ্টা করলে আপনার স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তবে আপনি এখন থেকে চেষ্টা করতে শুরু করলে শিশুর দুই বছরের মধ্যে আপনার ওজন কমিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আনা সম্ভব।