সুষম খাবার কমায় ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি 

ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিক্ষয় রোগের নানা কারণের মধ্যে অন্যতম একটি কারণ পুষ্টির ঘাটতি। খুব কম মানুষই এ সম্পর্কে জানেন। পুষ্টিতে দীর্ঘদিন ভারসাম্যহীনতা ও ভারসাম্যহীন ডায়েট ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এ ক্ষেত্রে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে।

ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ চিন্তা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হারান, স্মৃতিশক্তি লোপ পায় এবং ভাষা প্রকাশে সমস্যা দেখা দেয়। এই সবই ব্রেনের কার্যকারিতার সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। মস্তিষ্ক ঠিক রাখতে এমন খাবার খেতে হবে, যা মস্তিষ্কের কোষকে রক্ষা করে, মস্তিষ্ককে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও সুরক্ষায় সহায়তা দেয়।

ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত রোগীর খাবারের সমস্যা, মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা এবং মানসিক বিষাদ থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন। ডিমেনশিয়া রোগীর মস্তিষ্ক সংকেত পাঠায় কম। এর ফলে রোগীর খেতে না চাওয়া, খেতে ভুলে যাওয়া, খাবারের তাপমাত্রা না বোঝা কিংবা কোন কাজ কখন করছেন—তার সঠিক দিকনির্দেশনা পান না।

গবেষণায় দেখা গেছে, শৈশব থেকে সুষম ডায়েট মেনে চললে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি অনেকটা কমানো যায়। পাশাপাশি ইতিবাচক চিন্তাভাবনা, সামাজিক যোগাযোগ, নিয়মিত ব্যায়াম জরুরি। বর্তমানে ডিভাইসের প্রতি আসক্তি মানুষের কর্মতৎপরতা কমিয়ে দিচ্ছে, কম ঘুমাচ্ছে, সকালে নাশতা করছে না, মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ কম হচ্ছে। এলোমেলো জীবনযাপনের কারণে উচ্চ রক্তচাপ, ওজন বৃদ্ধি, স্ট্রোক বাড়ছে। ধূমপান ও মানসিক চাপ বাড়ছে। ডিমেনশিয়ার জন্য বায়ুদূষণ এবং শব্দদূষণও দায়ী।

ডিমেনশিয়া রোগীর পুষ্টি

● ডিমেনশিয়া রোগীর খাবার খেতে না চাওয়া বা খাবার খেতে ভুলে গেলে পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। এঁরা প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত পানি পান করেন না। কারণ, পিপাসার জন্য তাঁদের সংকেত যতটা শক্তিশালী হওয়া দরকার, তা হয় না। এতে পানিশূন্যতা হতে পারে।

● ডিমেনশিয়া রোগীরা কম বা বেশি খেতে চাইতে পারেন। এতে তাঁদের ওজন কমে বা বেড়ে যাচ্ছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে।

● হঠাৎ খাবারের পছন্দে পরিবর্তন আসতে পারে। আগে যেসব খাবার খেতেন, এখন সেগুলো পছন্দ করছেন না।

● অনেক ডিমেনশিয়া রোগীর খাবারের গন্ধ ও স্বাদের অনুভূতি কমে যায়। এ সময় কী ধরনের খাবার দিতে হবে, তা জানা।

● অনেক সময় দাঁতের সমস্যা থাকতে পারে, পাশাপাশি চিবাতে ও গিলতে সমস্যা থাকতে পারে। এ জন্য নরম খাবার দিতে হবে।

● বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ায় ডিমেনশিয়া রোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য বা বিভিন্ন পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এর ফলে রোগীর অবস্থা দেখে খাবার নির্বাচন করতে হবে।

● রোগী আগে থেকে কোনো রোগে আক্রান্ত কি না, সেটা জেনে খাবার নির্বাচন করা।

● এমন রোগী অনেক সময় নিজে খেতে পারেন না। কীভাবে খেলে নিজে খেতে পারবেন, সে জন্য পরামর্শ নেওয়া।

● বয়স, লিঙ্গ, উচ্চতা ও শারীরিক সমস্যার ওপর নির্ভর করে খাবারের পরামর্শ নেওয়া।

● পুষ্টিকর খাবারের বিষয়ে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

আগামীকাল পড়ুন: শিশুদের গ্রন্থি ফোলা