কণ্ঠস্বরের পরিবর্তনে সচেতন হোন

যদি ঘন ঘন কণ্ঠস্বর পরিবর্তিত হয় বা দীর্ঘদিন বা দুই সপ্তাহে ভালো না হয়, তবে দ্রুত নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে।

আমেরিকান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডেফনেস অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সূত্রমতে, ৭৫ লাখ মানুষ কোনো না কোনো কণ্ঠস্বরজনিত সমস্যায় ভুগছেন। কণ্ঠনালিতে প্রদাহ, পলিপ, ক্যানসারসহ নানা ধরনের রোগ হতে পারে। আমরা কণ্ঠস্বর সম্পর্কে সচেতন নই এবং খুব জটিল সমস্যা না হলে চিকিৎসকের কাছে যাই না। গবেষণা বলছে, বাংলাদেশে ১১ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো কণ্ঠনালির সমস্যায় ভুগছেন।

কণ্ঠনালির সাধারণ সমস্যাগুলো হলো কণ্ঠনালির প্রদাহ, নডিউল, পলিপ, কণ্ঠনালির প্যারালাইসিস, কণ্ঠনালির ক্যানসার ও অন্যান্য। সাধারণত শিক্ষক, আইনজীবী, কণ্ঠশিল্পী, রাজনীতিবিদ, হকার ও যাঁদের বেশি কথা বলতে হয়, তাঁদের কণ্ঠনালির সমস্যার ঝুঁকি বেশি। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করলে সব কটি রোগ, এমনকি কণ্ঠনালির ক্যানসারও সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়।

মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হলো কণ্ঠ বা কথা। আমাদের গলার সামনে ল্যারিংস বা শব্দযন্ত্র অবস্থিত। ল্যারিংস বা শব্দযন্ত্রে দুটি ভোকাল কর্ড থাকে। এই কর্ড দুটির কম্পনের মাধ্যমে শব্দ তৈরি হয়। শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় ফুসফুস থেকে প্রবাহিত বাতাস ভোকাল কর্ডে কম্পনের সৃষ্টি করে।

কথা বলা বা গান গাওয়ার সময় এ পরিমাণ প্রতি সেকেন্ডে ১০০ থেকে ১ হাজার বার। একজন বয়স্ক মানুষের দিনে ১০ লাখ বার ভোকাল কর্ড দুটির সংস্পর্শ হয়। অতএব ভোকাল কর্ডের ওপর আমরা অনেকটা নির্ভরশীল। তাই কণ্ঠকে সুস্থ–স্বাভাবিক রাখা খুবই দরকার।

কণ্ঠনালির সমস্যার উপসর্গ হলো গলাব্যথা, কণ্ঠস্বর পরিবর্তন, কাশি, কিছু গিলতে অসুবিধা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। অনেক সময় আমরা কণ্ঠ বসে যাওয়া বা ব্যথা নিয়ে কালক্ষেপণ করি। এতে রোগ ধরা পড়তে দেরি হয়। ধূমপান, কণ্ঠের অতি ব্যবহার, সংক্রমণ ইত্যাদি কণ্ঠের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। যদি ঘন ঘন কণ্ঠস্বর পরিবর্তিত হয় বা দীর্ঘদিন বা দুই সপ্তাহে ভালো না হয়, তবে দ্রুত নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে।

  • অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী, বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা