শীতকালীন চর্মরোগে করণীয়

বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় অর্গান বা অঙ্গ হচ্ছে চামড়া বা ত্বক, যার নিচের ভাগে রয়েছে পানির একটি স্তর। সব ধরনের পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর জন্য সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে এই ত্বক। তাই জলবায়ুর তারতম্যের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকেরও কিছু পরিবর্তন দেখা যায়।

শীত শুরুর আগে থেকেই ত্বকের শুষ্কতা দেখা দেয়। দেখা দেয় বিভিন্ন শীতকালীন চর্মরোগ। আবার এ সময় আগে নিয়ন্ত্রণে থাকা চর্মরোগ বেড়েও যেতে পারে।

শীতে যেসব রোগ বেড়ে যায় সেগুলো হলো—অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস, একজিমা, ইকথায়োসিস, সোরিয়াসিস, সেবোরিক ডার্মাটাইটিস, খুশকি, স্ক্যাবিস, চিলাইটিস, ঠোঁট ফাটা, ক্র্যাক হিল বা পা ফাটা ইত্যাদি।

উপসর্গ

  • শুষ্কতা, চামড়া ওঠা, ফোসকা পড়া, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া ও চুলকানি হতে পারে।

  • যাঁরা আগে থেকেই দীর্ঘমেয়াদি চর্মরোগে ভুগছেন (যেমন সোরিয়াসিস, অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস), তাঁদের রোগের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে।

  • সারা শরীরে চামড়া ওঠা শুরু হলে প্রদাহ হতে পারে। শরীর লাল হয়ে গেলে শরীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বা কাঁপুনি হলে, সংক্রমণ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

যা করতে হবে

  • এ সময় ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখাই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। এ জন্য নারিকেল বা অলিভ অয়েল, প্যারাফিন অয়েল বা ক্রিম, পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া মেডিকেটেড ময়েশ্চারাইজার, গ্লিসারিনযুক্ত সাবান সপ্তাহে দুই–তিন দিন ব্যবহার করা যায়।

  • খুব গরম পানি ব্যবহার না করে কুসুম গরম পানি গোসলে ব্যবহার করা।

  • খুশকি দেখা দিলে কিটোকোনাজলসহ শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।

মনে রাখুন

  • যেহেতু আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের পরিবর্তন আসে, তাই এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আবহাওয়া উপযোগী তেল, ময়েশ্চারাইজার ও সাবান ব্যবহার করা এবং নির্দিষ্ট ঋতুর উপযোগী জিনিস ব্যবহার করলে ত্বককে সঠিকভাবে পরিচর্যা করা সম্ভব।

  • এ ছাড়া প্রচুর পানি খাওয়া, ভিটামিনসমৃদ্ধ ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়ার মাধ্যমে ত্বককে সজীব রাখা সম্ভব।

ডা. শারমিন জাহান, চর্মরোগবিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল