পিত্তথলিতে পাথর হয়েছে কি না, কীভাবে বুঝবেন

হঠাৎ করে পেটে তীব্র ব্যথা পিত্তথলিতে পাথরজনিত কারণেও হয়ছবি: জনস হপকিন্স মেডিসিন

পেটের উপরিভাগের ডান দিকে ছোট নাশপাতিসদৃশ একটি অঙ্গ পিত্তথলি। হজমে সহায়তা দেওয়াই অঙ্গটির কাজ। পিত্তথলিতে পাথর সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে হয়ে থাকে, তবে যেকোনো বয়সেই হতে পারে। এটা খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। পুরুষদের তুলনায় নারীরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

পিত্তথলিতে সাধারণত দুই ধরনের পাথর হয়ে থাকে। যার মধ্যে কোলেস্টেরল–জাতীয় পাথরের আধিক্য বেশি। পাথরের আকার ছোট ধূলিকণা থেকে টেনিস বলের মতোও হতে পারে। এক বা একাধিক পাথরও থাকতে পারে। মজার ব্যাপার হলো, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পিত্তথলিতে পাথর কোনো উপসর্গ তৈরি করে না। তবে পিত্তথলিতে পাথরজনিত উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

পিত্তথলির পাথর যখন তার সঙ্গে সংযোগকারী পিত্তনালির পথ বন্ধ করে দেয় অথবা পিত্তথলির প্রদাহের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখন কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। সেগুলো হলো:

  • হঠাৎ করে পেটে তীব্র ব্যথা, যা কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

  • বমি বমি ভাব।

  • চোখ ও চামড়া হলুদ বর্ণ ধারণ করলে বুঝতে হবে জন্ডিস হয়েছে। সাধারণত পিত্তনালির কোনো সমস্যা দেখা দিলেই জন্ডিস হয়ে থাকে।

  • জ্বর বা শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া।

আরও পড়ুন

যাদের পিত্তথলির পাথরের ঝুঁকি বেশি

যেকোনো বয়সেই পিত্তথলিতে পাথর হতে পারে। তবে-

১. যাদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বা যাদের মেদবাহুল্য রয়েছে।

২. নারী।

৩. বয়স ৪০ বা এর বেশি।

৪. চর্বিজাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খেলে।

৫. শাকসবজি কম খেলে।

৬. ইস্ট্রোজেনসম্পন্ন ওষুধ খেলে।

৭. অতি দ্রুত ওজন হ্রাস করলে।

৮. বিশেষ ধরনের রক্তরোগ হলে।

৯. লিভার বা যকৃতের রোগ হলে।

জটিলতা

১. কোলেসিস্টাইটিস বা পিত্তথলির প্রদাহজনিত জটিলতা হতে পারে।

২. পিত্তনালির প্রতিবন্ধকতাজনিত জটিলতার আশঙ্কা আছে।

৩. অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহজনিত জটিলতা বা প্যানক্রিয়াটাইটিস।

৪. পিত্তথলির ক্যানসার। যদিও পিত্তথলির ক্যানসারের ঝুঁকি খুবই কম।

চিকিৎসা

অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পিত্তথলির অপসারণই পিত্তথলির পাথরজনিত উপসর্গের একমাত্র চিকিৎসা। তাই পিত্তথলির পাথর হওয়ার উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত শল্যচিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডা. মুসআব খলিল: পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল