এই ঠান্ডায় ‘ঠান্ডা’ লেগেছে? শ্বাসতন্ত্রে ভাইরাস ইনফেকশন হলে কী করবেন
এই ঠান্ডায় ‘ঠান্ডা’ লাগছে অনেকেরই। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘কমন কোল্ড’। মূলত আমাদের শ্বাসতন্ত্রের ওপরের অংশে ভাইরাস সংক্রমণের কারণেই সমস্যাটি হয়। কী করা উচিত এমন সমস্যায়? জেনে নেওয়া যাক।
যেসব উপসর্গ দেখা দেয়
নাক বন্ধ, সর্দি, হাঁচি আর গলাব্যথা ঠান্ডা লাগার সাধারণ কিছু উপসর্গ। কণ্ঠস্বর ভেঙে যাওয়া বা কাশির মতো উপসর্গও থাকে। তবে উচ্চমাত্রার জ্বর সাধারণত ঠান্ডা লাগার উপসর্গ নয়।
যা করবেন
প্রায় এক সপ্তাহ থাকে এসব উপসর্গ। তবে অনেকেরই কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত কিছু উপসর্গ থেকে যায়। এটি তেমন মারাত্মক কোনো রোগ না হলেও অস্বস্তিকর তো বটেই। চিকিৎসার মাধ্যমে ঠান্ডা পুরোপুরি সারানোর সুযোগ নেই। তবে উপসর্গের তীব্রতা কমাতে অনেক কিছুই করা যেতে পারে। ঘরোয়া টোটকায় অনেকটাই স্বস্তি মিলবে—
পর্যাপ্ত তরল খাবার খান। বিশেষ করে উষ্ণ পানি এবং পানীয় খেলে আরাম পাবেন। আদা–চা, মসলা–চা, স্যুপ, মধু মেশানো উষ্ণ পানীয় খেতে পারেন।
বিশ্রাম নিন।নাক বন্ধ থাকলে উষ্ণ ভাপ নিতে পারেন। নাকে নরমাল স্যালাইন ড্রপ (০.৯% সোডিয়াম ক্লোরাইড দ্রবণ) দিতে পারেন। বাজারে যেসব ডিকনজেস্ট্যান্ট ড্রপ পাওয়া যায়, সেসব এড়িয়ে চলাই ভালো।
অ্যান্টিহিস্টামিনজাতীয় ওষুধ খেতে পারেন। তবে হৃদ্রোগ, ফুসফুসের রোগ, মৃগীরোগ, লিভারের রোগ বা কিডনির রোগ থাকলে কোন কোন অ্যান্টিহিস্টামিন আপনার জন্য নিরাপদ, তা জেনে নিন। অন্তঃসত্ত্বা এবং স্তন্যদায়ী মায়ের ক্ষেত্রেও এ বিষয়টি জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
খেয়াল রাখুন
হাঁচি–কাশির আদবকেতা বজায় রাখুন। বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করলে অনেক উপকার।
ব্যবহৃত টিস্যু পেপার ফেলে দিন যথাস্থানে। রুমাল ব্যবহার করলে সেটিও যত্রতত্র রেখে দেবেন না।
হাত পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখুন অবশ্যই। হাতের মাধ্যমে এই জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে কাজের টেবিল, কি–বোর্ড, দরজার নব, সিঁড়ির রেলিং, গণপরিবহনের হাতল প্রভৃতিতেও।
ভুল ভেঙে যাক
কেউ কেউ ভাবেন, অ্যান্টিবায়োটিক–জাতীয় ওষুধ সেবনে দ্রুত সেরে উঠবেন। এ ধারণা ভুল। বরং অকারণ অ্যান্টিবায়োটিকে হিতে বিপরীত হতে পারে। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থাকতে পারে। কেবল তখনই অ্যান্টিবায়োটিক দেবেন চিকিৎসক।
ভিটামিন সি খেলে দ্রুত সেরে উঠবেন, এমনটাও ভাবেন অনেকে। এটা ঠিক যে ভিটামিন সি খেলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে। তবে সরাসরি এর প্রভাবে ঠান্ডা সেরে যাবে, এ ধারণা ভুল।
জিংক খেলেও যে রোগটি দ্রুত সেরে যাবে, তেমন নিশ্চয়তা দেওয়ার সুযোগ নেই।
ঠান্ডা কেবল শীতেই লাগে না; বছরের অন্যান্য সময়েও এই সমস্যা হতে পারে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত সব সময়ই।
কখন নেবেন চিকিৎসকের পরামর্শ
এসব উপসর্গ দেখা দিলে বিষয়টি গুরুত্ব দিন—
উচ্চমাত্রার জ্বর থাকলে।
চোখ, নাক, কপাল বা গালের আশপাশে তীব্র ব্যথা হলে।
কানে ব্যথা হলে।
শ্বাসকষ্ট হলে।
শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় অস্বাভাবিক শব্দ হলে।
সূত্র: হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং (হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল)