মেয়েদের কেন বেশি মাথাব্যথা হয়

রাতে ঘুম না হলেও সকালে মাথাব্যাথা হতে পারে
ছবি: প্রথম আলো

মাথাব্যথা নারী-পুরুষ সবারই কমবেশি হয়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু কিছু মাথাব্যথা তুলনামূলকভাবে মেয়েদের বেশি হয়।

মাথাব্যথার কারণ কী

মাথাব্যথার যতগুলো কারণ আছে, এর মধ্যে অন্যতম হলো ‘টেনশন’ বা চাপ। মেডিকেলের ভাষায় এটিকে বলে ‘টেনশন হেডেক’ বা ‘স্ট্রেস হেডেক’। সাইনোসাইটিসের কারণেও মাথাব্যথা দেখা যায়। মাইগ্রেনও মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। আরও কিছু কারণ আছে। তবে হঠাৎ মাথাব্যথার কারণ ভিন্ন। বিশেষ করে মাথাব্যথার ইতিহাস নেই, এ রকম কারও তীব্র মাথাব্যথা হলে স্ট্রোক, রক্তচাপ বা আঘাতজনিত সমস্যা থেকে এ রকম হতে পারে।

মেয়েদের কি মাথাব্যথা আসলেই বেশি হয়

কিছু মাথাব্যথা পুরুষ-নারী সবারই সমানভাবে হতে পারে। তবে কয়েক ধরনের মাথাব্যথা, যেমন মাইগ্রেন মেয়েদের বেশি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, হরমোনের তারতম্যই এর মূল কারণ। নারীদের শরীরে ইস্ট্রোজেন নামের হরমোনের কারণে এ রকম হতে পারে। এ কারণে অনেক মেয়ের বয়ঃসন্ধিক্ষণের প্রথম পিরিয়ডের সঙ্গে মাইগ্রেনের সমস্যাও শুরু হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যেসব নারী জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খান, তাঁদের মাইগ্রেন থাকলে তা বেড়ে যায়। এ কারণে চিকিৎসকেরা মাইগ্রেন যাঁদের আছে, তাঁদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেতে নিষেধ করেন।

এ ছাড়া কিছু মাথাব্যথা আছে, যেখানে মস্তিষ্কের প্রেশার বেড়ে এ রকম হয়। এ রকম একধরনের মাথাব্যথার কারণ ‘ইডিওপ্যাথিক ইন্ট্রাক্র্যানিয়াল হাইপারটেনশন’। দেখা যায়, মেয়েদের এটি তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। আবার মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে প্রেশার বেড়ে যায়, মেডিকেলের ভাষায় যাকে বলে ভেনাস থ্রম্বোসিস, এটিও মেয়েদের তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। হরমোনজনিত কারণ বা কিছু বাতরোগ এর পেছনে দায়ী। আবার গর্ভাবস্থার সময়ও কিছু শারীরিক ও হরমোনজনিত পরিবর্তনে মাথাব্যথা হতে পারে।

আরও পড়ুন

কোনো ধরনের মাথাব্যথাকেই হালকা করে দেখা উচিত নয়। মাথাব্যথা কী কারণে হচ্ছে, এটি নির্ণয়ের জন্য কিছু পরীক্ষা করতে হয়। মাইগ্রেন বা টেনশনের কারণে মাথাব্যথা রোগীর ইতিহাস জেনে শনাক্ত করা হয়। কিছু কিছু মাথাব্যথা আছে, যা মাইগ্রেনের উপসর্গের সঙ্গে একটু মিলে যায়, কিন্তু মাইগ্রেনের চেয়ে জটিল। সে ক্ষেত্রে ব্রেনের সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে মাথাব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করতে হয়। এ ছাড়া কিছু রুটিন রক্ত পরীক্ষাও করতে হতে পারে।

তাই মাথাব্যথা হলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

ডা. সাইফ হোসেন খান, মেডিসিন কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি