আচারের তেল খাওয়া কি খারাপ?

মৌসুমটা কাঁচা আমের। বছরজুড়ে আমের স্বাদ পেতে এ সময় আমের আচার করে রাখেন অনেকেই। আম ছাড়াও নানা উপকরণের আচার করা হয়। আচারে ব্যবহার করা হয় তেল আর হরেক পদের মসলা। তবে সুস্থ থাকতে তেল-মসলা কম খাওয়ার পরামর্শই দেন বিশেষজ্ঞরা। আচারের তেলও কি স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ, নাকি উপকারী?

আচারের মূল উপাদান শেষ হয়ে এলেও বাড়তি তেল থেকে যেতে পারেছবি: প্রথম আলো

আচারে সাধারণত শর্ষের তেল ব্যবহার করা হয়। পরিমিত পরিমাণে শর্ষের তেল গ্রহণ করা মন্দ নয়। তা ছাড়া এই তেলের সঙ্গে মিশে থাকে আচারে ব্যবহৃত মসলা। কাজেই মসলার উপকারিতাও পেয়ে যাবেন আচারের তেল থেকে। অর্থাৎ আচারের সঙ্গে আপনার পাতে খানিকটা তেল উঠে এলেও খেয়ে নিতে পারেন নিশ্চিন্তে। তবে মনে রাখতে হবে, আচারের তেল কখনো পুনরায় রান্নায় ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে অ্যাসিডিটির ঝুঁকি থাকে, এমনটাই জানালেন রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান

আচারের তেল থেকে যেসব উপকার পেতে পারেন

  • আচারের তেলে থাকে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। এ তেল গ্রহণে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা।

  • যে আচারে আদা বা জিরা ব্যবহার করা হয়েছে, সেটির তেল হজমে সহায়ক।

  • রসুন বা হলুদমিশ্রিত আচারের তেল আবার দেহের কোনো অংশে প্রদাহ থাকলে তা উপশমে কাজে দেয়।

  • মেথি ব্যবহার করা হয়েছে, এমন আচারের তেল খেলে তা আপনার চুলের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

আরও পড়ুন

আচারের বাড়তি তেল কীভাবে খাওয়া ভালো?

আচারের মূল উপাদান শেষ হয়ে এলেও বাড়তি তেল থেকে যেতে পারে। এই তেল ব্যবহার করতে পারেন সালাদ ড্রেসিং হিসেবে। বিকেলে মুড়ি-চানাচুর মাখিয়ে খাবেন? আচারের তেল দিয়ে মাখিয়ে ফেলুন, দারুণ স্বাদ পাবেন। ভাত, পাস্তা, ভাপানো মাছ, সবজির গ্রিল, সবজি সেদ্ধ কিংবা ডিমভাজি পরিবেশনের সময় তার ওপর ছড়িয়ে দিতে পারেন সামান্য আচারের তেল। স্বাদে, ঘ্রাণে খাবার টেবিলের পরিবেশটাই বদলে যাবে।

রান্নায়ও চাই আচারের স্বাদ?

কোনো খাবার রান্না করার পর আচারের স্বাদ আনতে কীভাবে আচারের তেল ব্যবহার করা যায়, তা তো জানলেন। কিন্তু রান্নার সময়ই যদি আচারি ঘ্রাণ আনতে চান, সে ক্ষেত্রে আবার আচারের তেল কাজে লাগাতে যাবেন না যেন। বরং রান্নায় যে তেল ব্যবহার করছেন, তাতে মিশিয়ে নিন আচারে ব্যবহারোপযোগী নানান রকম মসলা। স্বাদে বৈচিত্র্য আসবে, স্বাস্থ্যঝুঁকিও থাকবে না। অন্যদিকে আচারে ব্যবহৃত তেল রান্নায় দিলে তা কেবল মুখরোচকই হবে, স্বাস্থ্যসম্মত হবে না। কারও কারও মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আচারে যদি কাঁচা তেল ব্যবহার করা হয়, অর্থাৎ আচার তৈরির সময় যদি তেল চুলায় দেওয়া না হয়, তাহলে সেই তেল পরে কখনো রান্নায় ব্যবহার করা যাবে কি না? মূল বিষয়টা হলো আচার যেভাবেই তৈরি করা হোক না কেন, আচারের মসলা এবং অন্যান্য উপাদান তেলের সঙ্গে মিশে যাওয়ার ফলে তেলের বৈশিষ্ট্য বদলে যায়। সে কারণেই এই তেল আর কোনো পদ রান্নার সময়ই ব্যবহার করা উচিত নয়।

আরও পড়ুন

খেয়াল রাখুন

আচারে অন্যান্য মসলার পাশাপাশি বেশ খানিকটা লবণ ও চিনিও দেওয়া হয়। তাই আচার বা আচারের তেল কোনোটিই খুব বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। আচার বা আচারের তেলসহযোগে খাবার খাওয়ার অভ্যাস বানিয়ে ফেলাও ঠিক নয়।

আরও পড়ুন