বাড়িতে শয্যাশায়ী রোগী থাকলে কীভাবে তাঁর যত্ন নেবেন

রোগী যেন কিছুতেই নিজেকে পরিবারের বোঝা মনে না করেন
ছবি: প্রথম আলো

মারাত্মক দুর্ঘটনা, স্ট্রোক কিংবা অন্য কোনো রোগে যে কেউ চলার শক্তি হারাতে পারেন। হয়ে পড়তে পারেন শয্যাশায়ী। এমন পরিস্থিতিতে সেবাদানকারীর পক্ষে সব সামলানো কঠিন হয়ে যায়। এ ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে দায়িত্ব ভাগ করে নিতে পারলে ভালো। রোগীর যত্নে কর্মী নিয়োগ করলেও নিজেরা তদারক করুন।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার কদিন আগে থেকেই পরিচর্যার বিষয়গুলো একটু একটু করে শিখে নিতে হবে। খাবার এবং ওষুধ দেওয়ার নিয়ম, খাবার বা প্রস্রাবের নল (ক্যাথেটার) থাকলে সেটির রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিবর্তনের সময় জেনে নিন।

খাবারদাবার

  • কী ধরনের খাবার খাওয়ানো যাবে, জেনে নিন।

  • শোয়ানো অবস্থায় খাওয়াবেন না। খাওয়ানোর পর আধঘণ্টা রোগীকে শোয়াবেন না।

  • কোনো কোনো রোগী মুখে খেতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের নির্দেশনা ছাড়া মুখে খাবার, এমনকি পানিও দেবেন না। এতে খাবার বা পানি শ্বাসনালিতে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

  • নাকে নল দিয়ে খাবার খাওয়াতে হলে খাবার প্রস্তুতকরণ এবং খাওয়ানোর পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। নল দিয়ে খাবার ঠিকভাবে না ঢুকলে করণীয় সম্পর্কেও জেনে রাখুন।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা

  • দুই বেলা রোগীর মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। ব্রাশ ব্যবহার সম্ভব না হলে গজের টুকরা এবং মাউথওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কারের নিয়ম শিখে নিন।

  • মাথা ধুইয়ে দিন রোজ। শরীর মুছে দিন। শরীরের যেসব স্থানে বেশি ঘাম হয়, সেগুলো ভালোভাবে মুছতে হবে।

  • প্রতিদিন না পারলেও এক দিন বা দুই দিন অন্তর গোসল করান। মাঝেমধ্যে সাবান-শ্যাম্পুও করিয়ে দিন।

  • ঠোঁটে এবং ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে দিন।

  • রোগীর চুল আঁচড়ে দিন রোজ। পুরুষদের ক্ষেত্রে চুল, দাড়ি, গোঁফ ছোট করে রাখতে পারেন। তবে সুস্থ অবস্থায় কেউ চুল বা দাড়ি কাটাতে অপছন্দ করলে তাঁর সেই ভাবনার প্রতি সম্মান রেখেই তাঁকে পরিপাটি ও পরিষ্কার রাখুন।

  • প্রয়োজনমাফিক বগল এবং তলপেটের নিচের অংশ শেভ করে দিন।

  • ক্যাথেটারের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যাগে প্রস্রাব কতটা ভরলে খালি করতে হবে, জেনে নিন।

  • ডায়াপার বা কাপড়ে প্রস্রাব-পায়খানা হয়ে গেলে পরিষ্কার করতে দেরি করবেন না। সর্বক্ষণ ডায়াপার পরিয়ে রাখবেন না।

  • ভালোভাবে শৌচকর্ম করাতে হবে।

  • বিছানা এবং ঘর পরিষ্কার রাখুন।

আরও পড়ুন

আরও মনে রাখুন

  • রোগীকে দুই ঘণ্টা অন্তর পাশ পরিবর্তন করিয়ে দিন।

  • সম্ভব হলে রোজ কিছুটা সময়ের জন্য খোলামেলা জায়গায় বসান। হুইলচেয়ারে করে বাইরেও নিতে পারেন।

  • নিয়মমাফিক ব্যায়াম করান।

  • রোগীর মন ভালো রাখতে চেষ্টা করুন। তিনি যেন কিছুতেই নিজেকে পরিবারের বোঝা মনে না করেন।