ডায়াবেটিক রোগীরা পায়ের যত্ন নেবেন কেন?

ডায়াবেটিক রোগীর পা বা আঙুলের আঘাত থেকে জটিল সমস্যা তো হয়ই, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে
ছবি : সংগৃহীত

ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য পা একটি নাজুক অঙ্গ। কারণ, ডায়াবেটিস হলে রোগীদের পায়ের রক্তনালিতে যেমন সমস্যা হয়, তেমনি দেখা দেয় স্নায়ুবৈকল্য। তাঁদের পায়ে জীবাণু সংক্রমণ ও আঘাতজনিত ঘায়ের ঝুকিঁও বেশি। সামান্য আঘাত থেকে একজন ডায়াবেটিক রোগীর পা বা আঙুলে জটিল সমস্যা তো হয়ই, এমনকি এ ধরনের সমস্যা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ডায়াবেটিসের কারণে পায়ে যেসব জটিলতা দেখা দেয়, তাকে বলে ডায়াবেটিক ফুট।

দীর্ঘদিন রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকলে পায়ে বোধশক্তি হ্রাস পায়। এ ছাড়া রক্তনালি ব্লক হয়ে পায়ে রক্ত সরবরাহ কমে যায়। এসব কারণ ছাড়া আঘাতের কারণেও পায়ে ক্ষত বা সংক্রমণ দেখা দেয়। এই ক্ষত দ্রুত নিরাময় করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অপারেশন করে পায়ের কিছু অংশ কেটে বাদ দিতে হয়। এ জন্য শুরু থেকেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ডায়াবেটিক রোগীর বিশেষভাবে পায়ের যত্ন নেওয়া জরুরি।

ডায়াবেটিক রোগী কীভাবে তাঁর পায়ের যত্ন নেবে, চলুন জেনে নিই—

  • আরামদায়ক ও সঠিক মাপের জুতা পরতে হবে। জুতার কারণে পায়ে যেন আঘাত না লাগে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

  • দিনশেষে ভালোভাবে পা ধুয়ে শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। পায়ের দুই আঙুলের মাঝের জায়গা যেন ভেজা না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই ফাঁকেই ছত্রাক সংক্রমণ হয় বেশি।

  • ডায়াবেটিক রোগীর পায়ের চামড়া ফেটে সংক্রমণ হতে পারে। এ রকম হলে পেট্রোলিয়াম জেলি বা ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। শীতের রাতে পায়ে সুতি মোজা পরলে পা ফাটবে কম।

  • প্রতিদিন পায়ের পাতার ত্বক পরীক্ষা করুন। পায়ের পাতার ত্বক পরীক্ষা করে দেখার জন্য আয়না ব্যবহার করুন বা অন্যকে দেখে দিতে বলুন। পায়ের ত্বকের রঙের কোনো পরিবর্তন, ফোসকা বা লালচে দাগ চোখে পড়লে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

  • পায়ের বাড়তি নখ সোজাসুজিভাবে কাটুন।

  • রক্ত চলাচল ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত পায়ের ব্যায়াম করতে হবে।

  • কখনোই খালি পায়ে হাঁটবেন না, মোজা ছাড়া জুতা পরবেন না। ময়লা বা ভিজা মোজা পরবেন না।

  • গরম পানি ব্যবহার করার আগে অত্যধিক গরম কি না, অন্য কাউকে দেখে দিতে বলুন। ডায়াবেটিক রোগীর পায়ে বোধশক্তি কম থাকে, যে কারণে পানি বেশি গরম হলে পা পুড়ে যেতে পারে।

ডা. রোজানা রউফ, অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট, মেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল