ওষুধ হিসেবে মেলাটোনিন কেমন
শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। ঘুমের সমস্যা সমাধানের জন্য অনেকেই মেলাটোনিন নামক হরমোন ওষুধ খান। মেলাটোনিন ‘ওভার দ্য কাউন্টার’ ওষুধ, মানে প্রেসক্রিপশন ছাড়াও কেনা যায়। তাই অনেকেই নিজে নিজে কিনে খান। জেনে নিন ওষুধ হিসেবে মেলাটোনিন সম্পর্কে নানা তথ্য।
মেলাটোনিন প্রাকৃতিক হরমোন, ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণে এর আছে বিশেষ ভূমিকা। এ ছাড়া শরীরের তাপমাত্রা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। বাজারে বিভিন্ন নামে মেলাটোনিন ওষুধ পাওয়া যায়। অন্যান্য ঘুমের ওষুধের চেয়ে মেলাটোনিন ওষুধ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত এবং অন্যান্য ঘুমের ওষুধ সেবনের ফলে নেশা হওয়ার প্রবণতা থাকে, মেলাটোনিনে সে আশঙ্কা নেই বললেই চলে।
মেলাটোনিন ওষুধ খাওয়ার নিয়ম
শুরু করতে হবে অল্প পরিমাণে।
সাধারণত ২-৩ মিলিগ্রাম মেলাটোনিন ঘুমানোর ৩০ মিনিট আগে খেতে হবে।
ঘুমের চক্র ঠিক করার জন্য খেতে হলে ১৩ সপ্তাহের বেশি খাওয়া যাবে না।
কিছু কিছু রোগের জন্য দীর্ঘদিন মেলাটোনিন খেতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।
দীর্ঘ সময় বিমানভ্রমণ করলে মাঝেমধ্যে কিছু শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়, তা দূর করার জন্য মেলাটোনিন খেলে পাঁচ দিন খাওয়া ভালো। তবে সেসব ক্ষেত্রে বছরে ১৬ বারের বেশি খাওয়া যাবে না।
ওষুধ ছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে মেলাটোনিন বাড়ানোর উপায়
আলো মেলাটোনিন নিঃসৃত হতে বাধা দেয়, তাই ঘুমানোর সময় ঘরের সব আলো নিভিয়ে ঘুমাতে হবে।
ঘুমানোর আগে টিভি, কম্পিউটার, মুঠোফোন দেখা যাবে না।
দিনে ঘুমানো যাবে না।
ঘুমানোর আগে গোসল করে নিলে মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তি আসে।
ঘুমানোর আগে হালকা মেডিটেশন করা ভালো।
ঘুমানোর আগে চা, কফি, ধূমপান, অ্যালকোহল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
মেলাটোনিন কাদের জন্য প্রযোজ্য
২ বছরের নিচে শিশুদের দেওয়া যাবে না।
৫৫ বছরের ওপরে গ্রহণ করবে না।
গর্ভবতী, স্তন্যদানকারী মা মেলাটোনিন গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন।
হার্ট, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীরা মেলাটোনিন সেবনের আগে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন।
মেলাটোনিন সেবনের পর যেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে
চোখে ঝাপসা দেখলে।
হঠাৎ অচেতন হয়ে গেলে।
মাথা ঘোরালে।
নাক, মুখ, পায়ুপথ বা শরীরের অন্য কোথাও আকস্মিক রক্তপাত হলে।